পুজোয় টালা ব্রিজে বাস চলবে না। মঙ্গলবার নবান্নে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের পর একথা জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘রাইটসের আপত্তি মেনে নিয়ে আমরা টালা ব্রিজে বাস চালাবো না। এজন্য রাস্তার বিকল্প ম্যাপ পুলিশের তরফে দিয়ে দেওয়া হবে’।
পাশাপাশি রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি নিয়েও মুখ খোলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘ডিভিসি জল ছাড়ায় কিছু এলাকায় সমস্যা হয়েছে। হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরে কিছু দুর্গত মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে। মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে ২৪ ঘণ্টা মনিটরিং সেল তৈরি করা হয়েছে। ২ জন মন্ত্রীকে মালদা পাঠানো হচ্ছে। তাঁর পরামর্শ, ‘ডিভিসি যেন জল ছাড়ার আগে জানায়’।
মঙ্গলবার নবান্নে পূর্ত দপ্তর, পরিবহন দপ্তর, পুলিশ, কলকাতা পুরসভার অফিসার এবং রাইটস্-এর ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর সাংবাদিক সম্মেলনে মমতা বলেন, ‘রেল আমাদের কথা শোনে না। ওদের অনেক দিন আগেই আমরা একাধিক রেল ব্রিজ নিয়ে জানিয়েছিলাম। যেখানে টালা ব্রিজ ছিল। কিন্তু, তারা আমাদের কথা গুরুত্ব দেয়নি রেল। আমি চাই এ বিষয়ে রেল আর রাজ্য একটা মৌ স্বাক্ষর করুক, যাতে নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে এই ব্রিজগুলোর মনিটর করা যায়’।
একই সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, এই মুহূর্তে টালা ব্রিজে ছোট গাড়ি চললেও, বাস বা অন্য বড় গাড়ি চালানো সম্ভব নয়। তিনি বলেন, ‘টালা ব্রিজে ৩ টন পর্যন্ত গাড়ি চলাচল করবে আপাতত। তিন তারিখে এক জন বিশেষজ্ঞ আসছেন। তাঁর মতামত নিয়ে, এই বিষয়ে ফের ১২ তারিখ বৈঠক করা হবে’।
রাজ্য জুড়ে বন্যা প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ‘ডিভিসি জল ছাড়ার কারণেই মালদা, মুর্শিদাবাদ ও হাওড়া জেলার কিছু অংশে বন্যার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এই অবস্থা কী করে সামাল দেওয়া যায়, তা আলোচনা করার জন্য এবং পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য একটি মনিটরিং টিমও তৈরি করা হয়েছে’।
মমতা বলেন, ‘বাংলা অনেকটা নৌকার মতো। নেপালে বৃষ্টি হলে, ভুটানে বৃষ্টি হলে, ঝাড়খণ্ডে বেশি বৃষ্টি হলে, সব জল এখানে চলে আসে। আমাদের এখানে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি জল নিকাশির ব্যবস্থা করে না, ফলে ভুগতে হয় আমাদের। বন্যা নিয়ে একটা মনিটরিং কমিটি তৈরি করা হয়েছে। যারা রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতির উপরে নজর রাখবে। যেখানে সব দফতরের প্রতিনিধিরা থাকবেন। মন্ত্রীদের এলাকা ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। তারা সেই মত এলাকায় নজর রাখবেন’। মমতার অভিযোগ, এ রাজ্যে বেশি বৃষ্টির জন্য বন্যা হয় এমনটা নয়। কিন্তু অন্য রাজ্যের অতিবৃষ্টি এবং তার জেরে বেশি বৃষ্টির জল ছাড়ার কারণেই এখানে বন্যা হয়।