পেজা তুলোর মতো দুধসাদা মেঘ আছে, আকাশে ঘুড়ির ঝাঁক আছে, রেল লাইনের ধারে কাশ আছে, ঢাকেও কাঠি পড়ল বলে। পুজোর আর বাকিটা থাকল কী! এবার মা এলেই ষোলো কলা পূর্ণ হয়। ফলে দুরন্ত গতিতে সেজে উঠছে তিলোত্তমা। শেষ মুহূর্তের তোড়জোড় চলছে শহরের ছোট থেকে বড় সবকটি পুজোমন্ডপেই। ব্যস্ততা তুঙ্গে দক্ষিণ কলকাতা তথা শহরের সেরা দশ পুজোর মধ্যে অন্যতম চেতলা অগ্রণীতেও।
মন্ডপের অন্দর সজ্জা থেকে শুরু করে মূর্তি – এই মুহূর্তে সব ক্ষেত্রেই এক মহাযজ্ঞ চলছে অগ্রণীর পুজোমন্ডপে। যার শুরু জুন মাসের ৮ তারিখ বাঁশ বাধার মধ্যে দিয়ে। এবার ২৭ তম বর্ষে চেতলা অগ্রণীর থিম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘কলিকাতা চলিয়াছে নড়িতে নড়িতে’। শিল্পী অনির্বাণ দাসের ভাবনা ও শিল্পকলাই যেন সেই পথ দেখাচ্ছে মহানগরীকে। হাওড়া ব্রীজ থেকে শুরু করে ভিক্টোরিয়ার মত স্থাপত্য, রাজভবন থেকে বাঙালীর গড়ের মাঠ – কলকাতার ঐতিহ্য, ইতিহাস, তার পথ চলা সবই এক সাথে তুলে ধরছেন তিনি।
শিল্পী অনির্বাণ দাস এখন খবরকে বলেন, ‘লেটারবক্স দিয়ে কলকাতা গড়ে তোলা হচ্ছে এখানে। এই লেটারবক্সগুলির মধ্যে ব্যোমকেশ বক্সি, ফেলুদাদের মতো চরিত্রদের ঠিকানা লেখা থাকবে। আর পাইড পাইপারের গল্পে যেমন বাঁশিবাদকের বাঁশি শুনে শহরের সমস্ত ইঁদূর তার পিছু পিছু বেরিয়ে এসেছিল, এখানেও তেমনি থাকছে এক বেহালাবাদক। যার বেহালা সুরে অনেক কম্পিউটারের মাউস ওই লেটারবক্স থেকে বেরিয়ে বাইরে জমা হচ্ছে। এর মানে ডিজিটাল কলকাতাটা বেরিয়ে এল। আর পড়ে রইল পুরনো কলকাতা। দর্শকরা একটি সরু গলির মধ্যে দিয়ে মন্ডপে প্রবেশ করবে, যেখানে অনেক পেন্ডুলাম দুলবে।
সেই টাইমজোনটার মধ্যে দিয়ে ঢুকে গেলেই তাঁরা এক সাদাকালো কলকাতাকে দেখতে পাবেন। মনুমেন্ট, ভিক্টোরিয়া, হাওড়া ব্রীজ সব মিলিয়ে কলকাতার একটা কোলাজ, যা বার্ড ভিউতে সকলে দেখতে পাবেন।’ ফলে এমনই এক নস্টালজিক কলকাতাকে দেখতে যে এবারও দর্শনার্থীরা চেতলা অগ্রণীতে ভিড় করবে, তা বলাই বাহুল্য।