ষষ্ঠী টু দশমী এই পাঁচ দিনের জন্য বাঙালি একবছর অপেক্ষা করে থাকে। উৎসবের আমেজে থাকে আপামর বঙ্গবাসী। কিন্তু এই বাংলারই একপ্রান্তে মানে আসানসোলের হীরাপুরের ধেনুয়া গ্রামে ততক্ষণে শুরু হয়ে গিয়েছে দুর্গাপুজো। কারণ, এখানে মহালয়াতেই হয় দেবীর বোধন এবং নিরঞ্জন।
দামোদরের নদীর তীরে হীরাপুরের ধেনুয়া গ্রাম। এখানেই কালীকৃষ্ণ আশ্রম। অমাবস্যা তিথিতে মন্দিরে প্রথমে হয় কালীপুজো। সারারাত ধরে কালীপুজোর পর মহালয়ায় ভোর থেকে শুরু হয় দুর্গাপুজো। এদিন ভোররাতে নবপত্রিকা স্নান করানো হয়। শুরু হয় সপ্তমীর পুজো। এভাবেই একদিনে সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী এবং দশমীর পুজোও হয়। পিতৃপক্ষ থাকতেই এখানে শুরু হয়ে যায় পুজো প্রস্তুতি। মহালয়ার সকালের এই বিশেষ পুজো ‘আগমনি দুর্গা’ নামেই খ্যাত।
দূরদূরান্তের বহু মানুষ এই গ্রামের পুজো দেখতে ভিড় জমান। তবে কিছু বুঝে ওঠার আগেই হীরাপুরের ধেনুয়া গ্রামে শেষ হয়ে যায় দুর্গোৎসব। কালীকৃষ্ণ আশ্রমের সেবাইত ছিলেন যতীন মহারাজ। তার অবর্তমানে এখন দায়িত্ব সামলাচ্ছেন কালীকৃষ্ণ ধীবর। তিনি বলেন, “১৯৩০ সাল থেকে পুজো হয়ে আসছে। দশভুজা দেবী এখানে সিংহবাহিনী হলেও অসুরদলনী নন। আগমনি দুর্গার সঙ্গে থাকেন দুই সখী জয়া ও বিজয়া। তেজানন্দ ব্রহ্মচারীর গুরুদেব স্বামী দয়ানন্দ মহারাজ স্বপ্নাদেশ পেয়ে এই পুজোর শুরু করেছিলেন। প্রথমদিকে মায়ের রূপ ছিল অগ্নিবর্ণা, পরে শ্বেতশুভ্র বর্তমানে বাসন্তী রংয়ের।”
এই পুজোর পুরোহিত বিশ্বনাথ চট্টোপাধ্যায় জানান, “রীতি মেনে এখানে পুজোর লোকাচারগুলি হয়। চার রকমের ভোগ করতে হয় একদিনেই। দশমীর পুজো শেষে শাস্ত্রমতে নিরঞ্জন হয় ঠিকই, তবে প্রতিমা রেখে দেওয়া হয়।”