মধ্যপ্রদেশে চাঞ্চল্য। তদন্ত চালিয়ে হানি ট্র্যাপের সন্ধান পেল পুলিশ। নিম্নমধ্যবিত্ত ঘরের দুঃস্থ কলেজ ছাত্রীদের ব্যবহার করে ফাঁদে ফেলা হত মধ্যপ্রদেশের প্রথম সারির রাজনীতিক ও উচ্চপদস্থ আমলাদের। তারপর ব্ল্যাকমেল করে সেই সব ক্ষমতাশালী ব্যক্তির থেকে আদায় করা হত নানা সুবিধা। শুধু তাই নয় এই নিন্দনীয় কাজে নাম জড়াল এক কংগ্রেস নেতার স্ত্রীর। এবং জানা গেছে অভিযুক্ত ৫ জনের মধ্যে একজন বিজেপি নেতার বাড়ি ভাড়া নিয়ে অফিস চালাতেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, মোট পাঁচ জন মহিলা এই চক্রে যুক্ত ছিলেন। গতকাল তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁরা যৌনকর্মীদের ব্যবহার করে ধনী ও প্রভাবশালীদের ফাঁদে ফেলতেন। তাঁদের নানা ডেরায় হানা দিয়ে উদ্ধার করা হয়েছে সেক্স চ্যাটের ১ হাজার অডিও ক্লিপ ও আপত্তিকর ভিডিও। সেই সঙ্গে মিলেছে ২০০-র বেশি মোবাইল ফোনের নম্বর। পুলিশের ধারণা মধ্যপ্রদেশ ছাড়িয়ে এই কেলেঙ্কারির জাল বিস্তৃত ছিল অন্যান্য রাজ্যেও।
এই চক্রে জড়িত যে পাঁচ মহিলার মধ্যে দু’জনের নাম একই, শ্বেতা জৈন। একজন শ্বেতার বয়স ৩৯, অপরজনের ৪৮। এছাড়া ধরা পড়েছেন বরখা সোনি (৩৫), আরতি দয়াল (৩৪) এবং ১৮ বছর বয়সী এক কলেজছাত্রী। বরখা সোনি কংগ্রেস নেতা অমিত সোনির স্ত্রী। দুই শ্বেতা জৈনের মধ্যে একজন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যুক্ত। তিনি বিজেপির বিধায়ক ব্রিজেন্দ্র প্রতাপ সিং-এর বাড়ি ভাড়া নিয়ে অফিস চালান। মহারাষ্ট্রের মারাঠাওয়াড়া অঞ্চলে এক প্রভাবশালী রাজনীতিকের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ আছে। মধ্যপ্রদেশের এক প্রাক্তন মন্ত্রীর মাধ্যমে শ্বেতার সঙ্গে ওই রাজনীতিকের যোগাযোগ হয়।
জেরায় শ্বেতা বলেছেন, প্রথম সারির অফিসার ও আমলাদের টোপ দেওয়ার জন্য এক ডজনের বেশি কলেজ ছাত্রীকে ব্যবহার করা হত। তারা মূলত নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে। শ্বেতা তাদের লোভ দেখাতেন, ওই চক্রে শামিল হলে ভালো চাকরি পাবে। বিলাসবহুল জীবন কাটাতে পারবে।
এই কেলেঙ্কারির তদন্তে যে স্পেশাল ইনভেস্টিগেটিভ টিম গঠিত হয়েছে, তার নেতৃত্বে আছেন সঞ্জীব শামি। তিনি বলেন, আমরা ১০ জন সিনিয়র অফিসারের নাম জানতে পেরেছি। আটজন প্রাক্তন মন্ত্রীর নামও জানা গিয়েছে। তাঁরা হানি ট্র্যাপে জড়িয়ে অভিযুক্তদের নানা বেআইনি সুযোগ-সুবিধা দিতে বাধ্য হয়েছেন।