মোদী সরকারের দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতেই কেন্দ্রীয় নীতির জেরে দেশের অর্থনীতিতে গভীর মন্দা ও নীতি-পঙ্গুত্ব দেখা দিয়েছে। শিল্পে খরা। নগদ টাকার জোগান নেই। টানা পাঁচ ত্রৈমাসিকে মুখ থুবড়ে পড়েছে ভারতীয় অর্থনীতির বৃদ্ধি (জিডিপি)। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, এরই মধ্যে দেশে হু-হু করে বেড়েছে অতিধনী শিল্পপতিদের সংখ্যা।
বুধবার প্রকাশিত আইআইএফএল ওয়েলথ হুরুন ইন্ডিয়া রিচ লিস্ট থেকে আরও জানা যায়, ১,০০০ কোটি বা তার বেশি টাকার সম্পত্তিধারীদের সংখ্যা গত বছর ৮৩১ থেকে বেড়ে এ বছর ৯৫৩ হয়েছে। বৃদ্ধির হার ১৪.৬৮ শতাংশ! উল্লেখ্য, বর্তমানে দেশের ধনীতম ২৫ জনের সম্পত্তির মোট পরিমাণ দেশের মোট জাতীয় উৎপাদনের (জিডিপি) ১০ শতাংশের বেশি।
আইআইএফএল ওয়েলথ ম্যানেজমেন্ট-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর ইয়াতিন শাহ বলেন, এই অতিধনী ব্যক্তিদের বিপুল সম্পত্তির পিছনে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তির উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে। তিনি জানান, চলতি বছরের তালিকায় ঠাঁই পাওয়া শতকরা ৫৩ জনের সম্পত্তি পারিবারিক সূত্রে প্রাপ্ত। ফলে বোঝা যাচ্ছে, সম্পদ তৈরির সঙ্গেই তা যাতে বংশপরম্পরায় বজায় থাকে সেই বিষয়েও ধনীরা তৎপর।’
রিপোর্টের মুখ্য সমীক্ষক আনাস রহমান জুনেইদের দাবি, কেন্দ্র সরকার যে ভাবে অর্থনীতিকে ৫ লক্ষ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রায় নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে, তাতে আগামী ৫ বছরের মধ্যে এই তালিকা তিন গুণ বাড়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। আর এই ধনীতম ব্যক্তিদের তালিকায় টানা আট বছর শীর্ষস্থান ধরে রাখলেন রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ চেয়ারম্যান মুকেশ আম্বানি। ৩.৮ লক্ষ কোটি টাকার সম্পত্তি নিয়ে এই মুহূর্তে বিশ্বেও মুকেশ ধনীতম ভারতীয়।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের মার্চ মাসে প্রকাশিত ফোর্বসের ওয়ার্ল্ড বিলিওনেয়ার ইনডেক্সের তালিকায় ছ’ধাপ উঠে বিশ্বের ধনীদের তালিকায় ১৩ নম্বরে উঠে এসেছেন তিনি। তবে তালিকায় দু’নম্বরে থাকা এস পি হিন্দুজা ও পরিবার মুকেশের তুলনায় অনেকটাই পিছিয়ে। তাঁদের সম্পত্তির পরিমাণ আম্বানির অর্ধেকেরও কম, ১.৮৬ লক্ষ কোটি টাকা।
তিন ও চার নম্বরে রয়েছেন যথাক্রমে উইপ্রো প্রতিষ্ঠাতা আজিম প্রেমজি এবং আর্সেলর মিত্তল-এর চেয়ারম্যান তথা চিফ এগজিকিউটিভ অফিসার লক্ষ্মী মিত্তল। তাঁদের সম্পত্তির পরিমাণ ১.১৭ লক্ষ কোটি এবং ১.০৭ লক্ষ কোটি টাকা। প্রথম দশের বাকিরা হলেন যথাক্রমে আদানি গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা গৌতম আদানি, কোটাক মাহিন্দ্রা ব্যাঙ্কের ম্যানেজিং ডিরেক্টর উদয় কোটাক, সাইরাস পুনাওয়ালা, সাইরাস পালোনজি মিস্ত্রি, শাপুরজি পালোনজি এবং দিলীপ সাঙ্ঘভি।