ক্ষমতায় এসে পূর্বের তুলনায় স্বাস্থ্য পরিষেবার হাল আমূল বদলে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তাঁর উদ্যোগেই বাংলার মানুষ এখন বিনামূল্যে উচ্চমানের পরিষেবা পান হাসপাতালে৷ এবার ডেঙ্গু রুখতে উদ্যোগী হলেন মমতা৷
রাজ্যবাসীকে ডেঙ্গু থেকে বাঁচাতে এ বছর ৪৭৫ কোটি টাকা খরচ করছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বাস্থ্য দফতর। শুধু ডেঙ্গু মোকাবিলাতেই এই বিপুল অর্থ বরাদ্দ করেছে স্বাস্থ্য দপ্তর, যা সর্বকালীন রেকর্ড। আর এই বিপুল অর্থের পাঁচ ভাগের এক ভাগের কিছু বেশি— প্রায় ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে শুধুমাত্র ডেঙ্গু নিয়ে সরকারের শিরঃপীড়ার প্রধান কারণ উত্তর ২৪ পরগনা জেলার জন্যই। মঙ্গলবার রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের শীর্ষ সূত্রে এ খবর জানা গিয়েছে।
দপ্তর সূত্রের খবর, এই খরচ শুধুমাত্র আট বছরের তৃণমূল জমানায় ডেঙ্গুর জন্য বার্ষিক খরচের দিক থেকেই রেকর্ড নয়। স্বাধীনতার পর থেকে রাজ্যের কোনও সরকারই— তা সে কংগ্রেস, যুক্তফ্রন্ট, বামফ্রন্ট এবং এখনকার তৃণমূল যাই হোক না কেন, ডেঙ্গুর জন্য এই পরিমাণ অর্থ খরচ করেনি। মঙ্গলবার রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ অজয় চক্রবর্তী এ বিষয়ে বলেন, ঠিকই বলেছেন, এ বছর আমরা সর্বকালীন রেকর্ড খরচ করছি। ডেঙ্গু মোকাবিলায় এই খরচ সারা দেশেও সর্বোচ্চ— দাবি করছেন অজয়বাবু। পদস্থ সূত্রের খবর, এই অর্থের অর্ধেকের বেশি ইতিমধ্যেই খরচ করা হয়েছে ডেঙ্গু মোকাবিলার বিভিন্ন খাতে। বাকি টাকা খরচ করা হবে বছরের বাকি মাসগুলিতে।
এই বিপুল অর্থ কী কী খাতে রাজ্য খরচ করছে এবং বছরের বাকি মাসগুলিতে করবে? দপ্তরের শীর্ষ সূত্রের খবর, সবচেয়ে বেশি খরচ পড়ছে মশার মারার জন্য বিপুল দামের জৈব প্রযুক্তির বায়োলার্ভিসাইডস এবং বিভিন্ন ধরনের মশা মারার তেল কিনতে। এছাড়া সরকারি গাইডলাইন মেনে ডেঙ্গুর চিকিৎসা করাতে রাজ্যজুড়ে প্রশিক্ষণ, সরকারি হাসপাতালগুলিতে ডেঙ্গু চিকিৎসায় আধুনিক যন্ত্রপাতি কেনা ও ডেঙ্গুর বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষার জন্য কিট ও রি-এজেন্ট বাবদ খরচ, ডেঙ্গু সচেতনতার জন্য প্রচারে খরচ, ডেঙ্গুর চিকিৎসা নিয়ম মেনে হচ্ছে কি না দেখতে গঠিত কমিটি’র রাজ্যজুড়ে পরিদর্শন বাবদ যাতায়াত ও অন্যান্য অজস্র বিষয়ে খরচও রয়েছে। তবে ডাক্তার, নার্স, টেকনোলজিস্ট-সহ বিভিন্ন পর্যায়ের স্বাস্থ্যকর্মীদের বেতন এই টাকার মধ্যে পড়ে না।
রাজ্য সরকার ক্ষুব্ধ ডেঙ্গুখাতে এ বছরের কেন্দ্রীয় অনুদানের পরিমাণ দেখে। ডেঙ্গু এবং মশকবাহিত বিভিন্ন রোগ নিয়ন্ত্রণের জাতীয় কর্মসূচি ‘ন্যাশনাল ভেক্টর বর্ন ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রাম’ খাতে এ বছর বরাদ্দ হয়েছে মাত্র ২৫ কোটি! যা সরকারি সূত্রের মতে, সিন্ধুতে বিন্দুও নয়! তাছাড়া বরাদ্দ ৪৭৫ কোটি টাকার মধ্যেও এটি পড়ে না। এই গোটা খরচটা রাজ্য সরকার দিয়েছে সম্পূর্ণভাবে নিজের কোষাগার থেকেই।