দ্রুত সংবিধান সংশোধন করে রাজ্যের নাম ‘বাংলা’ করার দাবিতে মাস কয়েক আগেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তখন খোলাখুলিই জানিয়েছিলেন তিনি, পশ্চিমবঙ্গের নাম হোক বাংলা। একই দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। সংসদের অধিবেশনেও সংবিধান সংশোধনীর দাবি জানিয়েছেন দলীয় সাংসদরা। কিন্তু বারবারই কেন্দ্রের আপত্তিতে আটকে যায় সেই প্রস্তাব। তাই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এবারের বৈঠকে রাজ্যের নামের শুরুতে ‘বাংলা’ শব্দটি রেখে তার পর কেন্দ্র যদি কিছু জুড়তে চায়, তাতে আপত্তি নেই বলে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। গতকাল বৈঠক শেষে মমতা বলেন, ‘বাংলা-কে সামনে রেখে কিছু পরিবর্তন করতে চাইলে রাজি আছি।’ এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন বলে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘আমার মনে হয় আমাদের কখনও না কখনও সিদ্ধান্তে আসতেই হবে। প্রধানমন্ত্রী এর বিরুদ্ধে নন।’
প্রসঙ্গত, মমতা সরকারের দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতেই, ২০১৬ সালে বিধানসভায় সর্বসম্মতিতে পশ্চিমবঙ্গের বদলে ‘বাংলা’ নামে শিলমোহর পরে। এবং কেন্দ্রের কাছে সেই প্রস্তাব পাঠানো হয়। রাজ্যের যুক্তি ছিল, বিভিন্ন আন্তঃরাজ্য সম্মেলনে পশ্চিমবঙ্গের ডাক পড়ে একেবারে শেষে। ইংরেজিতে রাজ্যের নাম ওয়েস্ট বেঙ্গল হওয়ায় এবং রাজ্যগুলির নাম ইংরেজি হরফ অনুযায়ী সাজানোয় একেবারে শেষ পর্বে বলার সুযোগ আসে। সেই কারণেই নাম পাল্টানো দরকার। কিন্তু প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে এই নামের মিল থাকায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে আপত্তি জানায় বিদেশ মন্ত্রক। যার ফলে আড়াই বছর ধরে বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে রয়েছে। সম্প্রতি রাজ্যসভায় রাজ্যের নাম সংক্রান্ত ব্যাপারে প্রশ্ন তুলেছিলেন নির্দল সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। জানতে চেয়েছিলেন, কেন্দ্রীয় সরকার কি বাংলা নামে অনুমোদন দিয়েছে? যদি না দিয়ে থাকে তাহলে কেন তা দেওয়া হয়নি? তা বিস্তারিত জানতে চান ঋতব্রত। কিন্তু কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই জানান, এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভা কোনও অনুমোদন দেয়নি। ওই দিন বিকেলেই মোদীকে চিঠি লেখেন মমতা। কিন্তু তাতেও সেসময় কাজ হয়নি কোনও। তবে এবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর অনেকটাই আশাবাদী মমতা।