আকাশ পানে চাইলেই সাদা মেঘের ভেলা আর মাঠে-ঘাটে কাশ ফুলের মাথা দোলানো জানান দিচ্ছে যে আর মাত্র কয়েকদিনের অপেক্ষা। তারপরেই ঘরে ফিরবে ঘরের মেয়ে। তাই গোটা শহরজুড়েই এখন পুজোর প্রস্তুতি তুঙ্গে। সেই প্রস্তুতিতে পিছিয়ে নেই কাশী বোস লেনও। গত বছর তাদের থিমে ফুটে উঠেছিল শান্তির বার্তা। আর এবার ৮২ তম বর্ষে কাশী বোস লেনের থিম ‘অস্তিত্ব’। জলই জীবন, এই বার্তাই তাঁর থিমের মাধ্যমে তুলে ধরবেন শিল্পী প্রদীপ দাস। সমগ্র পরিকল্পনাই তাঁর।
এখন খবরের কাছে শিল্পী বলেন, ‘আমাদের থিম হল ‘অস্তিত্ব’। জল ছাড়া মানুষের কোনও অস্তিত্বই নেই। কিন্তু অত্যাধিক অপচয়ের ফলে সেই জল ক্রমেই নিঃশেষিত হওয়ার পথে। কলকাতা-সহ গোটা পৃথিবীতেই জলস্তর এখন অনেকটাই নীচে নেমে গিয়েছে। আর এর ফলে ক্রমশই এক ভয়ানক সময়ের দিকে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। এখানে আমাদের থিমে আমরা দুটো ভাগ রেখেছি। প্রথম ভাগে দেখা যাবে একটা জলের আধার। আর দ্বিতীয় ভাগে দেখা যাবে ঘাটে মা দাঁড়িয়ে আছেন।’
শিল্পীর কথায়, ‘ভারতের বিভিন্ন শহরের পাশাপাশি প্রায় গোটা বিশ্বেই জলের জন্য হাহাকার হচ্ছে। এবং উত্তরোত্তর তা আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই আমরা দর্শনার্থীদের এমন কিছু দেখাতে চাই, যাতে ঠাকুর দেখার আনন্দের পাশাপাশি তারা একটা সামাজিক বার্তা নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারে। এতে খরচ হচ্ছে প্রায় ৪০-৪৫ লক্ষ টাকা। আমাদের কাজ যদি মানুষকে সচেতন করে, তাদের ভাবায়, সেটাই আমাদের কাছে অনেক বড় প্রাপ্তি।’ পুরষ্কারের লড়াইয়ের থেকেও কাজের লড়াইকেই মুখ্য বলে মনে করছেন শিল্পী। সেই লড়াইয়ে কতটা সফল হল এই পুজো, তা সময়ই বলবে। তবে প্রতিবারের মতো এবারও যে দর্শনার্থীদের লম্বা লাইন পড়ে যাবে কাশী বোস লেনে, তাতে কোনও দ্বিমত নেই।