নিজেদের মাতৃভাষার সঙ্গে কোনোরকম আপোষ নয়। বাংলা সহ বিভিন্ন রাজ্যের পাশাপাশি এবার স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন কর্ণাটকের বিজেপি শাসিত সরকারের মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পা। সম্প্রতি হিন্দি দিবসের ভাষণে, হিন্দী ভাষাকে দেশের রাষ্ট্রীয় ভাষা করার প্রস্তাব দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আর তার পর থেকেই বিরোধিতার সুর উঠেছে গোটা দেশে। সব থেকে বেশি বিরোধিতা দক্ষিণ ভারতেই। এবার সেই দক্ষিণে বিজেপি শাসিত রাজ্য কর্ণটকের মুখ্যমন্ত্রীও বিরোধীদের সঙ্গে গলা মেলালেন।
সোমবার দক্ষিণ ভারতের অন্যতম বিজেপি নেতা তথা কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পা অমিত শাহের প্রস্তাবের জবাবে ‘না’ বললেন। এর আগে কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনরাই বিজয়ন এবং অভিনেতা রাজনীতিবিদ কমল হাসান এর তীব্র বিরোধিতা করেছেন। এদিন টুইটে ইয়েদুরাপ্পা লেখেন, “আমাদের দেশের সমস্ত সরকারি ভাষাই সমান। যাইহোক, কর্ণাটক বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন, কন্নড় হল মূল ভাষা। তার গুরুত্বের সঙ্গে আমরা কখনও কোনোরকমভাবে আপোষ করব না এবং কন্নড় ভাষা এবং রাজ্যের সংস্কৃতি তুলে ধরতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
দক্ষিণের রাজ্যগুলি বরাবরই হিন্দী ভাষার ব্যবহার পছন্দ করে না। অনেকেই হিন্দীকে উত্তর ভারতের চাপিয়ে দেওয়া ভাষা বলে মনে করেন। এই বিরোধিতায় যোগ দিয়েছে দেশের বিরোধী দলগুলি। এই ইস্যুতে যোগ দিয়ে কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনরাই বিজয়ন বলেন, “হিন্দী দেশকে একত্রিত করতে পারে, এমন দাবি অবান্তর।” ট্যুইটে তিনি লেখেন, “ওই ভাষাটি বেশীরভাগ ভারতীয়েরই মাতৃভাষা নয়। তাদের অনুগত করে তোলার জন্যই হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার পদক্ষেপ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মন্তব্য, অহিন্দিভাষীদের মাতৃভাষার বিরুদ্ধে যুদ্ধের ডাক।”
গত শনিবার, দেশজুড়ে পালিত হয় হিন্দী দিবস, সেদিনই ট্যুইটে, হিন্দীভাষাকে আরও ব্যাপক এবং দেশের কমন ভাষা হিসেবে তুলে ধরার আহ্বান জানান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আর তার পর থেকেই দেশজুড়ে চলছে বিতর্ক। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে অমিত শাহের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন অভিনেতা-রাজনীতিবিদ কমল হাসানও। তিনিও এই ঘটনার পর টুইট করে বলেন, “বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য, ভারত প্রজাতন্ত্র হওয়ার সময়েই আমরা শপথ নিয়েছিলাম। এখন কোনও শাহ, সুলতান বা সম্রাটই সেই শপথ ভাঙতে পারবেন না।”