সারা দেশে অর্থনৈতিক মন্দার বাজার। গাড়ি বাজারে নেমেছে বিরাট ধ্বস। জিডিপির নিরিখে বিশ্ববাজারেও পিছিয়ে পড়েছে ভারত। প্রায় দিন শেয়ারের বাজারের সূচক নিম্নগামী। তবে এহেন পরিস্থিতিতেও কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বার বারই দাবি করছেন, দেশের অর্থনীতির হাল মোটেও উদ্বেগজনক নয়। কিন্তু সেই অর্থনীতির হাল নিয়েই এ বার অন্য সুর ধরা পড়ল কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নীতিন গডকরির গলায়। শিল্প ও বাণিজ্যমহলকে তিনি বার্তা দিলেন, আর্থিক মন্দা চলছে ঠিকই, তবে আশা হারাবেন না।
প্রসঙ্গত, শনিবার নাগপুরে একটি অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন গডকরি। সেখান থেকেই তিনি এমন বার্তা দিয়েছেন দেশের শিল্প ও বাণিজ্যমহলকে। গডকড়ী বলেন, “গাড়ি শিল্পের সর্বভারতীয় সমাবেশে সম্প্রতি গিয়েছিলাম। গাড়ি প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলোর সঙ্গে কথা হল। তাদের মধ্যে একটা উদ্বেগ কাজ করছে।” এ প্রসঙ্গেই তাদের অভয় দিয়ে গডকরি বলেন, “কখনও খুশির সময় আসবে, কখনও আবার দুঃখ। কখনও সাফল্য আসবে, আবার কখনও ব্যর্থতা। জীবনচক্রটা এ ভাবেই তৈরি।” কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী যখন অর্থনীতি নিয়ে তাঁর দাবিকে জোরদার করার চেষ্টা করছেন, ঠিক সেই সময় নিতিন গডকড়ীর এই ‘পেপটক’ দেশের অর্থনীতির বাস্তব চিত্রটাকে আরও প্রকাশ্যে আনল বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
ওই অনুষ্ঠানে গডকরি আরও বলেন, “জানি দেশের শিল্প একটা কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। আমরা বৃদ্ধির হার বাড়াতে চেষ্টা করছি। বিশ্ব অর্থনীতি, চাহিদা, জোগান, বাণিজ্যও একই সমস্যায় ভুগছে।”
যখন একের পর এক গাড়ি কারখানা উৎপাদন বন্ধ রাখছে। লাখো মানুষের কাজ যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। বিস্কুট থেকে সাবান-শ্যাম্পুর বিক্রি কমছে। এই অবস্থায় নির্মলা সাংবাদিক বৈঠক করে দাবি করলেন, ‘‘উৎপাদন চাঙ্গা হওয়ার স্পষ্ট চিহ্ন দেখা যাচ্ছে।’’ সেখানে অর্থমন্ত্রীর এই দাবি এবং গডকড়ীর ‘পেপটক’ দেশের শিল্প ও বাণিজ্যমহলকে কতটা ভরসা জোগাতে সক্ষম হবে, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছেন অনেকেই। অর্থমন্ত্রী যা-ই দাবি করুন না কেন, দু’দিন আগে প্রকাশিত আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডারের একটি রিপোর্ট কিন্তু দেশের অর্থনীতির বাস্তব চিত্র তুলে ধরেছে। ওই রিপোর্টে দাবি করা হয়, ভারতের যা আর্থিক বৃদ্ধি আশা করা হয়েছিল, প্রকৃতপক্ষে তার থেকে ঢের কম। আর এই রিপোর্টই দেশের শিল্প ও বাণিজ্যমহলে উদ্বেগ বহুগুণ বাড়িয়েছে। অর্থমন্ত্রী যতই দাবি করুন যে অবস্থা স্থিতিশীল, তবুও অবস্থায় যথেষ্ট উদ্বেগের কারণ তা এদিন গডকরির কথা থেকে স্পষ্ট।