অ্যাসেজ সিরিজের শেষ টেস্টেও ছবিটা বদলাল না। প্রথম ইনিংসে ২৯৪ রানের পুঁজি নিয়ে ইংল্যান্ডের বোলাররা শুরুটা বেশ ভালোই করেছিলেন। ইংলিশ পেসার জোফ্রা আর্চার দুই ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার (৫), মার্কাস হ্যারিসকে (৩) দ্রুত আউট করে অস্ট্রেলিয়াকে চাপে ফেলে দিয়েছিলেন। ধুঁকতে থাকা অস্ট্রেলিয়াকে গোটা সিরিজেই অক্সিজেন জুগিয়েছেন স্টিভ স্মিথ। সিরিজের অন্তিম ম্যাচেও ইংল্যান্ডের বোলারদের সামনে ফের তিনি রুখে দাঁড়ালেন।
স্টিভ স্মিথ কার্যত কাঁদিয়ে ছাড়ছেন ইংল্যান্ডকে। ২৯৪ করার পর ৮৩-৩ হয়ে গিয়ে ওভালে চাপে পড়েছিল অজিরা। যথারীতি জো রুটের যাবতীয় পরিকল্পনা ভেস্তে দিয়ে ক্রিজে চুইংগামের মতো থিতু হয়ে গিয়েছেন স্মিথ। যাকে আউট করার অঙ্ক পাঁচ টেস্টেও বের করতে পারল না ইংল্যান্ড। অ্যাসেজ তো অস্ট্রেলিয়া দখলে রেখেইছে, বলা হচ্ছে, একা স্মিথই ইংল্যান্ডের যাবতীয় স্বপ্নে চোনা ফেলে দিয়েছেন।শেষ পর্যন্ত অবশ্য অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংস শেষ ২২৫ রানে। স্মিথ করেছেন ৮০। জোফ্রা আর্চার বল হাতে আবার দুরন্ত। নিলেন ৬২ রানে ৬ উইকেট। ৩ উইকেট স্যাম কারানের। ১টি ক্রিস ওকসের। স্মিথ ছাড়া আর বাকি কেউই দাঁড়াতে পারেননি।
ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে এই নিয়ে টানা দশ টেস্টে অর্ধশতরান হয়ে গেল স্মিথের। কিন্তু তাঁকে থামানোর রাস্তা এখনও বার করতে পারল না ইংল্যান্ড। শুক্রবারেও তিনি অর্ধশতরান করলেন জ্যাক লিচকে লং অনের উপর দিয়ে ছক্কা মেরে। ২০১০ সালের অ্যাশেজ সিরিজে অ্যালেস্টেয়ার কুক ৭৬৬ রান করেছিলেন। এ বার অ্যাশেজ সিরিজে স্মিথ সেই রেকর্ড ভেঙে দিতে পারেন।
এখনই সিরিজে ৭৫১ রান করে ফেলছেন স্মিথ। গত ৮৩ বছরে কোনও অ্যাসেজে মার্ক টেলর ও অ্যালিস্টার কুক ছাড়া এত রান আর কেউ করেননি। ওভালে আরও একটি ইনিংস পাবেন স্মিথ। কেউ কেউ বলছেন, হেডিংলে-তে তিনি খেললে কোনও টেস্ট সিরিজে করা ব্র্যাডম্যানের ৯৭৪ রানের বিশ্বরেকর্ডও সংশয়ে পড়ে যেত। সেই এজবাস্টন থেকেই ধারাবাহিকতায় নিজেকে তুঙ্গে নিয়ে গিয়েছেন অজি ক্রিকেটার। এক বছর নির্বাসনের পরে টেস্টে ফিরে এই প্রত্যাবর্তন টেস্ট ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকছে। তিনি না থাকার সময় বিরাট কোহলি দখল করেছিলেন টেস্টে তাঁর এক নম্বর জায়গাটা। যথারীতি এই সিরিজে বিরাটকে টপকে ফের এক নম্বরে ফিরে এসেছেন স্মিথ।গত দিনের ২৭১-৮ অবস্থায় শুরু করে ইংল্যান্ডের ইনিংস বেশিক্ষণ টেকেনি। ২৯৪ রানের গুটিয়ে যায়। কিন্তু ডেভিড ওয়ার্নার (৫) ও মার্কাস হ্যারিসকে (৩) দ্রুত ফিরিয়ে দিয়ে ইংল্যান্ডকে স্বপ্ন দেখান জোফ্রা আর্চার। মার্নাস লাবুশানেকেও ফেরান আর্চারই। তবে আউট হওয়ার আগে ৪৮ করে যান তিনি। ম্যাথু ওয়েডকে (১৯) ফিরিয়েছেন স্যাম কারান। শেষ দিকে পিটার সিডল (১৮) ও নাথন লিয়ঁ (২৫) কিছুটা রান না তুললে আরও খারাপ দেখাত অস্ট্রেলিয়াকে। তবে লড়াইয়ের জায়গায় আনলেন সেই স্মিথই।