বৃহস্পতিবার ভারতের ক্রিকেট আকাশে উদয় হল এক নতুন তারার। যাঁর নাম শুভমন গিল। সদ্য ২০ বছরে পা দিয়েছেন। পঞ্জাবের কৃষিবিদের সন্তান। যাঁকে ট্র্যাক্টর চালানো চাষের জমিতে ক্রিকেট শেখাতেন তাঁর বাবা। পূর্বাভাস মতো দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে আসন্ন টেস্ট সিরিজের ১৫জনের দলে ঢুকে পড়লেন শুভমন। তাঁকে দলে নেওয়া হয়েছে ‘ফ্লোটার’ হিসেবে।
টেস্ট ক্রিকেটে ‘ফ্লোটার’ পদটি এই প্রথম দেখা যাবে। যেখানে টি-টোয়েন্টি বা ওয়ান ডের মতো যে কোনও জায়গায় ব্যাট করতে ব্যাটসম্যান তৈরি করে রাখা হচ্ছে। শুভমন প্রয়োজনে ওপেন করবেন। আবার মিডল অর্ডারেও খেলতে পারেন। যখন যেখানে ফাঁক তৈরি হবে। শুভমনকে এমনই প্রতিশ্রুতিসম্পন্ন ধরা হচ্ছে যে, অদূর ভবিষ্যতে তিনি তিনটি ফর্ম্যাটে জায়গা করে নিলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ব্যর্থতার জন্য টেস্ট টিম থেকে ছিটকে গেলেন কর্নাটকের ওপেনার লোকেশ রাহুল। তাঁর বদলে রোহিত শর্মাকে ওপেনার হিসেবে স্কোয়াডে রাখা হয়েছে।
মোটামুটি ভাবে যা ঠিক হয়েছে, রোহিতকে ওপেনার হিসেবে যথেষ্টই সুযোগ দেওয়া হবে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধেই ভারত খেলবে তিনটি টেস্ট। ছ’টি ইনিংসে রোহিত ওপেন করার সুযোগ পেলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই। ঠিক যে ভাবে বীরেন্দ্র সহবাগকে ওপেনার বানিয়ে সৌরভ বলে দিয়েছিলেন, ‘‘বীরু তুই ওপেন কর। মিডল অর্ডারে জায়গা করতে পারছি না। কথা দিচ্ছি তুই পুরো সিরিজ পাবি।’’ রোহিতকেও তেমনই প্রতিশ্রুতি দেবেন কোহালিরা। কথা হচ্ছে সহবাগ সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ভারতের সর্বকালের অন্যতম সেরা টেস্ট ওপেনার হয়ে উঠেছিলেন। রোহিত একই ভাবে ওয়ান ডের মতো টেস্টেও নিজেকে অপরিহার্য করে তুলতে পারেন কি না, তা সময়ই বলে দেবে। তবে ওপেনার হিসেবে দাগ কাটতে গেলে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে আসন্ন টেস্ট সিরিজে বড় রান করে দেখাতে হবে তাঁকে।
লোকেশ রাহুল বাদ পড়লেও টিমে থেকে গিয়েছেন তাঁর কর্নাটকের টিমমেট ওপেনার মায়াঙ্ক আগরওয়াল। ওয়েস্ট ইন্ডিজে দুই টেস্টের সিরিজে সর্বোচ্চ ২৮৯ রান করে নিজের জায়গা ধরে রেখেছেন মিডল অর্ডার ব্যাট হনুমা বিহারি। কাজেই রোহিতকে টিমে রাখতে হলে ওপেনার হিসেবে ভাবা ছাড়া উপায় ছিল না। দলীপ ফাইনালে বাংলার ওপেনার অভিমন্যু ঈশ্বরন ১৫৩ রানের ম্যারাথন ইনিংস খেললেও তাঁকে আপাতত অপেক্ষা করতে হবে।
আরও দু’জন তরুণ ওপেনার দ্রুতগতিতে উঠে আসছেন। একজন বাংলার অভিমন্যু ঈশ্বরন। অন্যজন গুজরাতের প্রিয়ঙ্ক পঞ্চাল। দু’জনকে বোর্ড প্রেসিডেন্ট একাদশে রাখা হয়েছে। তেমনই বাংলা থেকে সুযোগ পেয়েছেন জোরে বোলার ঈশান পোড়েল। সম্প্রতি ক্যারিবিয়ান সফরে ভারতীয় এ দলের হয়ে খুব ভাল খেলেছিলেন শুভমন। একটি ডাবল সেঞ্চুরি-সহ তিনিই ছিলেন সর্বোচ্চ স্কোরার। সেই সফরে অভিমন্যু রান করতে পারেননি। সেটাই তাঁকে আসন্ন সিরিজে কিছুটা পিছিয়ে দিল। আবার দলীপের ফাইনালে তিনি সেঞ্চুরি করেছেন। এবং যদি বোর্ড প্রেসিডেন্ট একাদশের হয়ে সফররত দক্ষিণ আফ্রিকা দলের বিরুদ্ধে নিজেকে প্রমাণ করতে পারেন, তা হলে অদূর ভবিষ্যতে বাংলার ওপেনারের জন্য সুযোগের দরজা খুলে যেতেই পারে। অভিমন্যুকে এখন শুধু রান এবং রান করেই যেতে হবে।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ভারত তিনটি টেস্ট খেলবে। যথাক্রমে বিশাখাপত্তনম (২-৬ অক্টোবর), পুনে (১০-১৪ অক্টোবর) ও রাঁচি (১৯-২৩ অক্টোবর)।
