সোনার মেয়ের কাছে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়া সত্যিই খুবই উল্লেখযোগ্য ও আনন্দের কথা। তবে সেইসঙ্গে রিও অলিম্পিকসে সোনা হারানোর দুঃখটা আজও তাড়া করে পিভি সিন্ধুকে। শুধু রিও অলিম্পিকসই নয়, বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ (২০১৭, ২০১৮), দুবাই সুপার সিরিজ ফাইনাল (২০১৭), কমনওয়েলথ গেমস (২০১৮) এবং জাকার্তা এশিয়ান গেমসে (২০১৮) রুপো পেয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে ভারতীয় এই তারকা ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড়টিকে। প্রথমবারের মতো সোনা পেয়ে ইতিহাস তৈরি করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার এক সাক্ষাৎকারে সিন্ধু বলেছেন, ‘একাধিক ফাইনালে হারের পর অনেকেই অনেক কথা বলেছেন। শুনতে হয়েছে, আমি নাকি ফাইনালফোবিয়ায় ভুগি। এবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ জেতার পর তাঁরা নিশ্চয়ই চুপ করে রয়েছেন। বাসেলে যাবতীয় জবাব দিয়েছে আমার র্যাকেট। কিন্তু অলিম্পিকসে সোনা জয়ের স্বাদই আলাদা। তিন বছর আগে রিও ডি জেনেইরোয় ফাইনালে ক্যারোলিনা মারিনের বিরুদ্ধে প্রথম গেমে জেতার পরেও শেষরক্ষা হয়নি। তাই এবার ট্রফি ক্যাবিনেটে ওলিম্পিকসের সোনা রাখতে চাই। ওটাই আমার প্রধান লক্ষ্য।’
গত দু’বার বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে হার মেনেছিলেন পিভি সিন্ধু। ২০১৭ সালে ওকুহারা এবং ২০১৮’তে ক্যারোলিনা মারিনের কাছেই দৌড় শেষ হয়েছিল তাঁর। এবার সেই খরা ঘুচিয়ে সোনা পেয়েছেন সিন্ধু। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ খেতাব তাঁকে তৃপ্তি দিয়েছে। পাশাপাশি বাড়িয়েছে ওলিম্পিকসে সোনা জয়ের বাসনা। তবে টোকিওতে এই লক্ষ্য সফল করার জন্য একাধিক কঠিন চ্যালেঞ্জ তাঁকে অতিক্রম করতে হবে তা জানেন ২৪ বছর বয়সী সিন্ধু। কারণ বিশ্লেষণ করতে গিয়ে তাঁর মন্তব্য, ‘রিও ডি জেনেইরোতেই আমি প্রথমবার ওলিম্পিকসে খেলি। তাই প্রতিদ্বন্দ্বীরা আমার সম্পর্কে তেমন কিছু জানত না। কিন্তু এখন পরিস্থিতি বদলেছে। এবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে জাপানের নোজুমি ওকাহারাকে হারানোর পর সবাই নিশ্চয়ই আমার পারফরম্যান্স নিয়ে কাটাছেঁড়ায় ব্যস্ত। টোকিও ওলিম্পিকসের আগে প্রত্যেকে আমার খেলার ধরন নিয়ে হোম-ওয়ার্ক করবে। তাই সোনা জয় সহজ হবে না। তাই তার আগে নিজের খেলায় নতুনত্ব আনাই আমার লক্ষ্য। যাতে প্রতিপক্ষকে বোকা বানিয়ে সহজে জয় ছিনিয়ে নিতে পারি। নতুন কোচ কিমের সঙ্গে এই ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। ওঁর পরামর্শ আমায় আরও নিখুঁত করে তুলেছে। আগামী বছর অলিম্পিকসের আগে অনেক কিছু শেখার জন্য আমি তৈরি।’
উল্লেখ্য, এই মুহূর্তে র্যাঙ্কিংয়ে পঞ্চম স্থানে রয়েছেন পিভি সিন্ধু। ওলিম্পিকসের ড্র হয় র্যাঙ্কিংয়ের নিরিখেই। তবে তা নিয়ে কোনও দুশ্চিন্তা নেই ভারতীয় ব্যাডমিন্টন তারকাটির। ২০১৭ সালে র্যাঙ্কিংয়ের দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন পিভি সিন্ধু। তাহলে কি এখন শীর্ষস্থানে পৌঁছানোর তাগিদই তাঁর সবচেয়ে বেশি? স্মিত হেসে সিন্ধুর উত্তর, ‘অলিম্পিকসে সোনা জেতাই প্রথম লক্ষ্য। তারপর শীর্ষস্থান স্পর্শ নিয়ে ভাবব। আগামী সপ্তাহে চীন ওপেনে খেলব। তারপর রয়েছে কোরিয়া ওপেন। এই দু’টি প্রতিযোগিতায় ভালো খেলার ব্যাপারে আমি আশাবাদী।’