ক্রিকেটে দুনিয়ার নক্ষত্র পতন। ৬৩ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শুক্রবার রাতে মৃত্যু হয় পাকিস্তানের কিংবদন্তি লেগস্পিনার আব্দুল কাদিরের। অসুস্থ বোধ করায় তাঁকে হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। কিন্তু চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়। সেই কাদিরের জীবনে আছে অনেক জানা-অজানা গল্প।
১৯৫৫ সালে পাকিস্তানের লাহৌরে তাঁর জন্ম নেন এই নক্ষত্র। পুরো নাম আব্দুল কাদির খান। পাকিস্তানের ঘরোয়া ক্রিকেটে প্রথম খেলতে আসেন ১৯৭৫-’৭৬ মরশুমে। হাবিব ব্যাঙ্ক লিমিটেডের হয়ে শুরু তাঁর ক্রিকেট সফর। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখেন ১৯৭৭ সালে। ঘরের মাঠ লাহৌরেই ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্ট। ড্র হয়ে যাওয়া ম্যাচে সেই ভাবে ছাপ ফেলতে পারেননি তিনি। ২২ বছরের কাদিরের প্রথম শিকার ইংল্যান্ডের বব উইলিস।
কেরিয়ারে কাদির খেলেছেন ৬৭টি টেস্ট এবং ১০৪টি ওয়ান-ডে। তাঁর সংগ্রহে রয়েছে ২৩৬টি টেস্ট উইকেট এবং ১৩২টি একদিনের উইকেট। টেস্টে ইনিংসে পাঁচ উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব রয়েছে ১৫ বার। টেস্টে তাঁর সেরা বোলিং ৫৬ রানে ৯ উইকেট। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ১৯৮৭ সালে লাহৌরের গদ্দাফি স্টেডিয়ামেনিজের এই রেকর্ড করেন তিনি। একদিনের ক্রিকেটে সেরা বোলিং ১৯৮৩-র বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে। ৪৪ রান দিয়ে পাঁচ উইকেট পেয়েছিলেন সে দিন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেন ১৯৯৩ সালে। যদিও টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছিলেন ১৯৯০ সালে ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে খেলে।
খেলোয়াড় হিসেবে বিতর্কে না জড়ালেও ২০০৪ সালে ধারাভাষ্য দেওয়ার সময় সৃষ্টি হয় বিতর্ক। পাকিস্তান টেলিভিশন (পিটিভি)-এর হয়ে ধারাভাষ্য দেওয়ার সময় তিনি বলেন, “আমরা সবাই জানি সব পাকিস্তানি পেস বোলাররা বল বিকৃত করে।” তাঁর এই বক্তব্য চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে। তাঁর সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে দেয় সেই টিভি চ্যানেল।
ফিঙ্গার স্পিনার বিশ্ব ক্রিকেট অনেক পেলেও চাহালদের পূর্বসূরি কাদিরই প্রথম রিস্ট স্পিনার। তাঁর লেগ ব্রেক এবং গুগলি ত্রাস সৃষ্টি করত ব্যাটসম্যানদের মনে। তার সঙ্গে ছিল তাঁর অদ্ভুত বোলিং অ্যাকশন। অনেকে নাচের সঙ্গেও তুলনা করেছেন সেই বোলিং অ্যাকশনের।