চন্দ্রযান ২-এর শেষ মুহূর্তে হারিয়ে যাওয়া কি নিছকই দুর্ঘটনা না রাজনীতির শিকার? এবার উঠল এমনই প্রশ্ন। বিক্রমের ব্যর্থতার কারণ খুঁজতে গিয়ে উঠে আসছে এ ধরণেরই বিস্ফোরক তথ্য।
ইসরো সূত্রে খবর, ২০১৩ সাল থেকে অন্তত ১০০ বার ল্যান্ডার বিক্রমের অবতরণ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছিলেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু প্রতিবারই অবতরণের আগে সে ভেঙে পড়েছে। এত বড় একটা প্রকল্পের আগে এমন লাগাতার ব্যর্থতার কথা পুরোপুরি দেশবাসীর আড়ালেই রেখেছিল ইসরো। সংবাদমাধ্যমও ব্যর্থতার সেই অভেদ্য দুর্গে প্রবেশ করে সত্য জানতে পারেনি।তবে বিক্রমের চারটি পায়ে যে সমস্যা ছিল, সেকথা একবার স্বীকার করেছিল ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা।
রাজনীতির প্রভাব রয়েছে আরও। ৬ সেপ্টেম্বর ছিল দ্বিতীয় মোদী সরকারের শততম দিন। তাই এই দিনকে স্মরণীয় করে রাখতে চন্দ্রযান ২ গুরুত্বপূর্ণ ধাপটি সম্পূর্ণ করুক, তা চেয়েছিলেন কেন্দ্রের অনেক কর্তাব্যক্তিই। তাই কি ল্যান্ডার বিক্রমের মাত্র ২৪-২৭ শতাংশ সাফল্য সত্ত্বেও ঝুঁকি নিয়ে তাকে পাঠানো হয়েছিল চাঁদে? এই রাজনৈতিক চাপের কথা ঘনিষ্ঠ মহলে আকারে-ইঙ্গিতে ব্যক্ত করেছিলেন স্বয়ং শিবনই। এখানে আরও একটা প্রশ্ন তৈরি হচ্ছে। তাহলে কি বিজ্ঞানীদের সাফল্যকে ভারতের সাফল্য বলে দাবি করার একটা রাস্তা তৈরি করা হচ্ছিল?
ইসরোর অন্দরমহলে এনিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে দ্বন্দ্ব। বিজ্ঞানীদের একাংশ বারবার আক্ষেপ করে বলছে, বিক্রমকে না পাঠালে বোধহয় এই দিন দেখতে হত না। আরেকাংশের দাবি ঠিক উলটো। বিক্রম হারালেও অরবিটারের অক্ষত থাকাকেই ৯৫ শতাংশ সাফল্য বলে দাবি করছেন তাঁরা। হতেই পারে দিন দুই পর অরবিটার ফিরবে বিক্রমের অবতরণের সুখবর নিয়ে। তখন সাফল্য হবে ১০০ শতাংশ। কিন্তু তার আগে পর্যন্ত ভারতের বিজ্ঞানসাধনায় রাজনীতির এই যে ছায়া, তা প্রকট হয়ে গেল।