যে কোনও ব্যক্তিকে সন্ত্রাসবাদী হিসেবে চিহ্নিত করার ক্ষমতা রাখতে পারে কেন্দ্র, সন্ত্রাস দমনে এমনই সংশোধিত বিল পাশ হয়েছিল লোকসভায়। তবে এই বিলের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। এবার সেই আবেদনের ভিত্তিতেই কেন্দ্রকে নোটিশ পাঠাল দেশের সর্বোচ্চ আদালত। উল্লেখ্য, কিছু দিন আগে এই আইনকে কাজে লাগিয়েই জইশ-ই-মহম্মদ প্রধান হাফিজ সইদ এবং অপরাধ জগতের মাথা দাউদ ইব্রাহিমকে সন্ত্রাসবাদী হিসেবে চিহ্নিত করে সরকার।
জুলাই মাসে সেই আইনি সংশোধনের পরে গত ৪ সেপ্টেম্বর জইশ-ই-মহম্মদ প্রধান মৌলানা মাসুদ আজহার, লস্কর-ই-তইবার প্রতিষ্ঠাতা হাফিজ মহম্মদ সইদ, ২৬/১১ মুম্বই হামলার অন্যতম ষড়যন্ত্রী এলইটি কম্যান্ডার জাকি-উর-রহমান লকভি এবং অপরাধ জগতের কুখ্যাত ডন দাউদ ইব্রাহিমকে সন্ত্রাসবাদী ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।
সজল আওয়াস্থি এবং অ্যাসোসিয়েশন ফর প্রোটেশন অফ সিভিল রাইটস নামে এক এনজিও-র আবেদনের ভিত্তিতে শুক্রবার কেন্দ্রীয় সরকারকে নোটিস পাঠিয়েছে শীর্ষ আদালত। সেই আবেদনে অভিযোগ করা হয়েছে, আইনি সংশোধনের ফলে সাংবিধানিক অধিকার এবং ব্যক্তিগত সুনাম রক্ষার অধিকার ক্ষুণ্ণ করা হয়েছে। বলা হয়ছে, ‘২০১৯ সালের ইউএপিএ আইনে সন্ত্রাস দমনের নামে সরকারকে অপ্রত্যক্ষ নিষেধাজ্ঞা জারির ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, যা আমাদের গণতান্ত্রিক সমাজের জন্য ক্ষতিকর।’
সাবেক সন্ত্রাস-দমন আইনে (ইউএপিএ অ্যাক্ট) কোনও সংগঠনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসমূলক কাজ, সন্ত্রাসের জন্য প্রস্তুতি অথবা সরাসরি সন্ত্রাসে যুক্ত থাকার প্রমাণ পেলে তবেই তাকে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করতে পারত প্রশাসন। গত জুলাই মাসে সংসদে ওই আইনের সংশোধিত সংস্করণ পাশ হওয়ার ফলে সংগঠনের বদলে কোনও ব্যক্তিকে শুধুমাত্র সন্দেহের বশেই সন্ত্রাসবাদী হিসেবে চিহ্নিত করার ক্ষমতা পেয়েছে সরকার। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে এনআইএ তদন্তের অনুমতি দেওয়া, রাজ্য পুলিশের অনুমতি ছাড়াই তাঁর সম্পত্তি তদন্তের আওতায় আনার ক্ষমতাও লাভ করেছে সরকার।