আসামের গোয়ালপাড়া জেলার মাটিয়ায় ৪৫ কোটি টাকা খরচ করে তৈরি হচ্ছে আচমকা নাগরিকত্বের স্বীকৃতি হারিয়ে বিদেশি বলে গণ্য মানুষদের জন্য তৈরি হচ্ছে বিশেষ বন্দীশালা। গুয়াহাটি থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে প্রায় ৩০০০ বন্দি থাকতে পারবেন, এমন ভাবেই তৈরি হচ্ছে ওই সেন্টার। কিন্তু এই বন্দীশালা কাদের জন্য? এনআরসি-র ভিত্তিতে যারা বিদেশি বলে গণ্য হবেন তাদের জন্য৷ কিন্তু মোদী সরকারের এই এনআরসি তালিকাতে কোন সঠিক মূল্যায়ণ নেই। দেশের জন্য প্রাণ ত্যাগ করা মানুষের পরিবারকেও সহজে তালিকা থেকে বাদ দিচ্ছে সরকার।
আপনি কি আসামের বাসিন্দা? আপনি কি ভারতীয়? এনআরসি তালিকার ভিত্তিতে উত্তরটা না হলে আপনার জন্য হয়তো অপেক্ষা করছে দেশের বৃহত্তম বন্দীশালা, সরকারি পরিভাষায় ডিটেনশন সেন্টার।
ক’দিন আগে প্রকাশিত আসামের এনআরসির চূড়ান্ত তালিকায় রাজ্যের প্রায় ১৯ লক্ষ মানুষের নাম ওঠেনি। তাঁদের হাতে এখনও ১২০ দিন সময় আছে ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে আরও কাগজপত্র জমা করে এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করার। ততক্ষণ পর্যন্ত কাউকে বন্দি করা হবে না বলে আশ্বাসও এসেছে কেন্দ্রের তরফে। তথ্য যাচাইয়ের জন্য আগামী ৩ মাসে তৈরি হচ্ছে আরও ২০০ ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল।
এখন আসামে ডিটেনশন সেন্টার আছে ৬টি, যেগুলি জেলা সংশোধনাগারের মধ্যে চলে। তাতে বিদেশি বলে গণ্য মানুষদের থাকতে হয় বিভিন্ন অপরাধে অভিযুক্তদের সঙ্গে। যেমন, ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে মামলা হারার পর ডিটেনশন ক্যাম্পে ঠাঁই হয়েছিল ভারতীয় সেনার অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন মহম্মদ সানাউল্লাহর। সেখানে আর পাঁচ জন অপরাধীর সঙ্গে একমাস কাটাতে হয় তাঁকে। মাটিয়ার বন্দীশালাই প্রথম, যেখানে শুধু বিদেশি বলে গণ্যরা থাকবেন। এমন আরও ১০টি সেন্টার তৈরি করতে চায় বিজেপি শাসিত রাজ্য সরকার।
বরপেটা, ডিমা, হাসাও, কামরূপ, করিমগঞ্জ, লখিমপুর, নগাঁও, নলবাড়ি, শিবসাগর ও শোনিতপুরে হবে সেই বন্দিশালা। প্রতি বন্দিশালায় প্রায় ১০০০ জনের থাকার ব্যবস্থা হবে।