দ্বিতীয় মোদী সরকারের বাজেট পেশের পরই বসে গিয়েছিল গাড়ি ব্যবসার চাকা। গাড়ি বিক্রিতে ধস নামার ফলে বিপাকে পড়ে যন্ত্রাংশ উৎপাদনকারী সংস্থাগুলিও। অবস্থা এতটাই গুরুতর যে, এপ্রিল মাস থেকে ইতিমধ্যেই সাড়ে ৩ লক্ষ কর্মী ছাঁটাই হয়েছে। আগামী দিনে আরও ১০ লক্ষ কর্মী ছাঁটাইয়ের আশঙ্কা করছে গাড়ির যন্ত্রাংশ তৈরির সংস্থাগুলি।
এরইমধ্যে গাড়ি সংস্থাগুলির সংগঠন সিয়াম জুলাইয়ের যে বিক্রির পরিসংখ্যান প্রকাশ করে, তা ঠান্ডা স্রোত বইয়ে দিয়েছে অর্থনীতির শিরদাঁড়ায়। দেখা গেছে, জুলাই মাসে দেশের মধ্যে গাড়ির পাইকারি বিক্রি কমার হার দাঁড়িয়েছে প্রায় দু’দশকের মধ্যে সব চেয়ে বেশি। এমনই তীব্র মন্দার পরিপ্রেক্ষিতে এবার উত্তর ভারতে মানেসর ও গুরুগ্রামের কারখানা দু’টি দু’দিন বন্ধ রাখার কথা জানাল মারুতি-সুজুকি। দেশের যাত্রিবাহী গাড়ি বাজারের অর্ধেকই যাদের দখলে।
প্রসঙ্গত, যত দিন যাচ্ছে, ভারতে ততই নাভিশ্বাস উঠছে গাড়ি শিল্পের। আর্থিক বৃদ্ধির গতি শ্লথ থেকে শ্লথতর হয়ে পড়ায় গাড়িনির্মাতা সংস্থাগুলির কপালে ভাঁজ বাড়তে শুরু করেছে। মূলত, মানুষের হাতে নগদ টাকা এবং চাকরির নিশ্চয়তা না থাকায় বিক্রি হচ্ছে না গাড়ি। ফলে গাড়িনির্মাতা সংস্থাগুলির গুদামে অবিক্রিত গাড়ি জমতে জমতে পাহাড় হয়ে গিয়েছে। গত আগস্ট পর্যন্ত ভারতে এই অবস্থা চলছে টানা ১০ মাস ধরে।
এর ফলে, কর্মী ছাঁটাইয়ের পাশাপাশি উৎপাদন বন্ধের পথেও যেতে হচ্ছে গাড়িনির্মাতা সংস্থাগুলিকে। মারুতি বুধবার জানিয়েছে, ৭ ও ৯ সেপ্টেম্বর তাদের দু’টি কারখানায় কোনও গাড়ি তৈরি হবে না। বিক্রি কমায় সাত মাস ধরে তারা উৎপাদন কাটছাঁট করে চলেছে। আগস্টে উৎপাদন কমেছে প্রায় ৩৪ শতাংশ। সূত্রের দাবি, গত বছর অগস্টে মানেসর ও গুরুগ্রামে দিনে গড়ে ৬৭০০টি গাড়ি তৈরি হলেও এ বার হয়েছে প্রায় ৪৫০০টি।
উল্লেখ্য, এর আগে টাটা মোটরস তাদের জামশেদপুরের বাণিজ্যিক গাড়ির কারখানাটি আগস্টে কিছু দিন বন্ধ রাখে। তাদের চেন্নাই প্ল্যান্টে উৎপাদন বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করেছিল ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই গাড়ি নির্মাতা সংস্থা হুন্ডাই মোটরসও। বর্তমান বাজারের অবস্থার কথা মাথায় রেখে এই পদক্ষেপ করেছে তারা। এছাড়া হোন্ডা, মহীন্দ্রা অ্যান্ড মহীন্দ্রা, টয়োটা কির্লোস্কার মোটরস, হিরো মোটো কর্প, অশোক লেল্যান্ড, টিভিএসের মতো অনেক সংস্থাই কয়েক দিন হয় সম্পূর্ণ, না হয় আংশিক উৎপাদন বন্ধ রেখেছে।