আজ খাগড়াগড় বিস্ফোরণকান্ডে রায় দিল ব্যাঙ্কশাল আদালত। এই কাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত ২ মহিলার ৬ বছরের কারাবাস ঘোষণা করেন বিচারক। অর্থাৎ ৬ বছর জেল হল আলিমা ও গুলশানরা বিবির। অন্যদিকে দোষী সাব্যস্ত আবদুল হাকিম ও রেজাউল করিমের ৮ বছর কারাবাস। তাঁদের ২০ হাজার টাকা জরিমানা ধার্য করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও ১ বছরের জেল। দোষী শেখ রামতুল্লার ১০ বছরের জেল ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা ঘোষণা। তাঁর ক্ষেত্রেও অনাদায়ে আরও ১ বছর জেল। দোষী সাইদুল ইসলাম ও মহম্মদ রুমেলকেও ১০ বছরের কারাবাস, একইসঙ্গে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এদিন সাজা ঘোষণার পরে এই মামলার বিচারক জানিয়েছেন, ৫ বছর সাজা খেটে নিয়েছে যারা, তাঁদের বাকিটা খাটলেই হবে। সেক্ষেত্রে আলিমা ও গুলশানরা বিবির আর ১ বছর জেল খাটলেই হবে। বিস্ফোরণকাণ্ডে অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত ছিল এই ২ মহিলা। বিস্ফোরকের আঘাতে ছিন্নভিন্ন প্রিয়জনের দেহের সামনে পড়ে থাকা অবস্থাতেও এই ২ মহিলা জঙ্গি কার্যকলাপের প্রমাণ লোপাট করার চেষ্টা করেছিল।
প্রসঙ্গত, এদিন আদালতের কাছে সর্বনিম্ন সাজার আবেদন জানায় অভিযুক্তরা। পরিবারের কথা উল্লেখ করে আদালতের কাছে সর্বনিম্ন সাজার আবেদন জানানো হয়। এদিনও কোলে সন্তানকে নিয়ে আদালতে ঢুকতে দেখা যায় আলিমা ও গুলশানরা বিবিকে। তবে তাঁদের সেই দাবি খারিজ করে দিয়ে সর্বোচ্চ সাজার পক্ষে সওয়াল করেন সরকারি আইনজীবী তমাল মুখোপাধ্যায়। দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পর আদালত মুলতুবি করে দেন বিচারক। বিকেল ৪টেয় সাজা ঘোষণার কথা জানান তিনি। শেষমেশ বিকেল সোয়া ৫টা নাগাদ সাজা ঘোষণা করেন বিচারক। সাজা শেষের পর বাংলাদেশিদের সেদেশে ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
প্রায় ৫ বছর পর আজ বর্ধমান খাগড়াগড় বিস্ফোরণকাণ্ডের সাজা ঘোষণা করেছে ব্যাঙ্কশাল আদালত। এই ঘটনায় মোট ৩১ জন অভিযুক্তের মধ্যে ১৯ জন পিটিশন দাখিল করে নিজেদের অপরাধ কবুল করেছে। তাঁরা জানিয়েছে, বিস্ফোরণের ঘটনার সঙ্গে তাঁদের সরাসরি যোগ রয়েছে। ২৩ আগস্ট আবেদনের শুনানি হয়, গুলশনরা বিবি, আলিমা বিবি-সহ ১৯ জনকে কাঠগড়ায় তোলা হয়। প্রত্যেকের কাছে জানতে চাওয়া হয়, তাঁরা কারও প্ররোচনায় দোষ স্বীকার করছেন কিনা। অভিযুক্তরা জানান, তাঁরা কারও প্ররোচনা ছাড়াই দোষ স্বীকার করছেন। এরপরই ১৯ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে এনআইএ-র বিশেষ আদালত।