এক দেশ, এক আইন, এক নেতা – গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়া এড়িয়ে দেশকে পাকাপাকি রাষ্ট্রপতি শাসিত ব্যবস্থার দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। এমনই আশঙ্কা প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘আমি আজ ভবিষ্যদ্বাণী করে যাচ্ছি, দেশ প্রেসিডেন্শিয়াল ফর্ম অফ গভর্নমেন্টের দিকেই যাচ্ছে’।
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের মঞ্চ থেকে এই বিষয়ে দেশকে সতর্ক করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আমরা কি প্রেসিডেন্শিয়াল ফর্ম অফ গভর্নমেন্টের দিকে যাচ্ছি? এক ভোট, এক জাতি, এক রাজনৈতিক দল, এক নেতা’?
সমাবেশের পরে বিধানসভায় জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের শতবর্ষ উপলক্ষ্যে আলোচনায় অংশ নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আমার একটা শঙ্কা হচ্ছে। সেই শঙ্কাটা আমি বিধানসভায় নথিভুক্ত করে যাচ্ছি। এক ভোট, এক জাতি, এক দল এবং এক নেতা— এই ভাবে আমরা কি প্রেসিডেন্শিয়াল ফর্ম অফ গভর্নমেন্টের দিকে যাচ্ছি? আমরা চাই, গণতন্ত্র দীর্ঘজীবী হোক’।
যেভাবে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার বিরোধী দলের কথা না শুনে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে একের পর এক সিদ্ধান্ত নিচ্ছে এবং বিল পাশ করছে, সেদিকে ইঙ্গিত করেন মুখ্যমন্ত্রী। এক্ষেত্রে কারও সঙ্গে কোনও আলোচনা না করে যেভাবে কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বিলোপ করা হল, সেই বিষয়েও প্রশ্ন তোলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘৩৭০ ধারা নিয়ে আমাদেরও একটা বক্তব্য আছে। কারও কথা শোনাই হল না। সর্বদলীয় বৈঠকও হল না। এটা এমন কোনও বড় ব্যাপার নয় যে আলোচনায় মিটত না। বন্দুকের নল দিয়ে চেপে দেওয়া হল। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীদের আটক করে রাখা হয়েছে। কে কোথায় কীভাবে আছেন জানি না। দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না’।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘তামিলনাড়ুর কিছু হলে বাংলা ঝাঁপিয়ে পড়ত, পাঞ্জাব বা কেরলে কিছু হলে অন্য রাজ্য এগিয়ে যেত— এই ছিল ভারতবর্ষ’। বিজেপি-র নাম উল্লেখ না করে বলেন, ‘এরা বিচ্ছিন্ন করে দিচ্ছে। রাজ্যগুলির মধ্যে যে ঐক্য ছিল তা নষ্ট করে দিচ্ছে। এখন দেশের চরিত্র ও দর্শন বদলে দেওয়া হচ্ছে। একটি রাজনৈতিক দল দেশের চরিত্র এবং উদার মানসিকতা নষ্ট করে দিচ্ছে’।