দ্রুত পড়ছে টাকার দাম। শিল্পক্ষেত্রে মন্দা চরমে। এই ভয়াবহ আর্থিক সঙ্কট থেকে বাঁচতে ও বিনিয়োগ বাড়াতে এফডিআই নীতির ঢালাও সংশোধন করার সিদ্ধান্ত নিল মোদী সরকার। এই লক্ষ্যেই প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নীর একঝাঁক ক্ষেত্রকে উন্মুক্ত করে দিল কেন্দ্র।
মন্ত্রীসভার বৈঠকে কয়লা থেকে উৎপাদন শিল্প, অনলাইন সিঙ্গল ব্র্যাণ্ড খুচরো ব্যাবসা থেকে ডিজিট্যাল মিডিয়ার পথ প্রশস্ত করা হয়েছে। এই সুবিধা প্রদানের জন্য এফডিআই আইনের সংশোধন করা হবে। সাম্প্রতিক বাজেটেই বিদেশি লগ্নীর ক্ষেত্রকে উন্মুক্ত করার আভাস দিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। সেই সিদ্ধান্ত মতোই এফডিআই আরও বাড়ানো হচ্ছে। কয়লা প্রসেসিং ইউনিটে বিদেশি লগ্নীর রাস্তা খোলা হয়েছে ১০০ শতাংশ। একইসঙ্গে সিদ্ধান্ত হয়েছে, এবার থেকে কন্ট্রাক্ট অথবা চুক্তি ভিত্তিক উৎপাদন ক্ষেত্রেও ১০০ শতাংশ এফডিআই করা যাবে। অর্থাৎ বৃহৎ কোনও উৎপাদন সংস্থা যারা চুক্তির মাধ্যমে শিল্পোৎপাদন করে তাদের জন্য ১০০ শতাংশ এফডিআইয়ের পথ খোলা হচ্ছে।
ডিজিটাল মিডিয়া জগতও ক্রমেই অনেক বড় আকারে ভারতে পা রাখছে। সেদিকে লক্ষ্য করে ডিজিটাল মিডিয়ায় ২৬ শতাংশ এফডিআই ঘোষণা করা হয়েছে। অর্থাৎ ভারতীয় মালিকানার কোনও ডিজিটাল মিডিয়ার ২৬ শতাংশ শেয়ার কিনতে পারবে বিদেশি সংস্থা। এদিকে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক থেকে ১ লক্ষ ৭৬ হাজার কোটি টাকা নিয়ে আর্থিক সঙ্কট মোকাবিলা করার মরিয়া চেষ্টা করতে সচেষ্ট হলেও সরকার অত্যন্ত উদ্বিগ্ন টাকার ক্রমাগত ডলারের সঙ্গে বিনিময় মূল্য হ্রাসের প্রবণতায়। কয়েকটি অর্থনৈতিক সমীক্ষক সংস্থা আজ আশঙ্কা প্রকাশ করেছে এই প্রবণতা অব্যাহত থাকলে আগামী কিছুদিনের মধ্যেই টাকার মূল্য ডলারের বিনিময়ে এতটাই কমে যাবে যা সম্ভবত বিগত ৬ বছরের রেকর্ডকেও ছাড়িয়ে যাবে। এক ডলারের সঙ্গে টাকার বিনিময় মূল্য গত ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে হয়েছিল সর্বনিম্ন, প্রায় সাড়ে ৭৪ টাকা।
আবার ফিরে আসতে পারে সেই প্রবণতা। কারণ টাকার মূল্য এখন প্রায় ৭৩ টাকা স্পর্শ করছে। আর এভাবে টাকার মূল্য হ্রাস পাওয়ায় বৈদেশিক বাণিজ্য ঘাটতি নিয়ে বড়সড় সঙ্কটের পরিস্থিতি আসতে চলেছে। সামগ্রিকভাবে লগ্নি তলানিতে, নতুন শিল্পস্থান প্রায় শূন্য এবং আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য চরম ধাক্কা খেয়েছে। এমতাবস্থায় আর্থিক সঙ্কট মোকাবিলা ও বিশেষ করে কর্মসংস্থান রক্ষা করতে সরকারের সমস্ত মন্ত্রককে নিয়ে বৈঠক করা হবে বলে স্থির হয়েছে। অর্থমন্ত্রক ও নীতি আয়োগ ওই বৈঠকে থাকবে।