পৃথিবীর টান কাটিয়ে গত ২০ আগস্ট চাঁদ মুলুকে ঢোকার পর বুধবার চাঁদের দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল চন্দ্রযান-২। সকাল ৯টা ৪ মিনিটে ঢুকে পড়ল আমাদের একমাত্র উপগ্রহের তৃতীয় কক্ষপথে। এর পাশাপাশিই এই মহান গবেষণায় আরেক ধাপ এগোলো ইসরো। র্যাডার, ল্যান্ডস্যাট কাটিয়ে তাই এক চাপা টেনশন কাজ করলেও খানিক খুশি ইসরোর প্রযুক্তিবিদ-সহ বিজ্ঞানী ও গবেষকরা।
আগামী ২ সেপ্টেম্বর চাঁদের কক্ষপথে চন্দ্রযান-২-এর থেকে আলাদা হয়ে যাবে ল্যান্ডার ‘বিক্রম’। তার আগে আজ ও আগামী কালই শেষ বারের মতো উপবৃত্তাকার কক্ষপথে চাঁদকে প্রদক্ষিণ করবে ভারতের দ্বিতীয় চন্দ্রযান। উত্তরোত্তর গতি কমিয়ে ওই দু’টি বৃত্তাকার কক্ষপথে প্রদক্ষিণের পর আগামী ১ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে (রাত ১ টা ৫৫ মিনিটে) বিক্রম ল্যান্ডার চন্দ্রযান ২ থেকে আলাদা হয়ে যাবে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে ৭ সেপ্টেম্বর চাঁদের দক্ষিণ মেরু এলাকায় ‘ম্যানজিয়াস-সি’ এবং ‘সিম্পেলিয়াস-এন’ ক্রেটারের মাঝের একটি উচ্চভূমিতে (যা তুলনায় সমতল) নামবে ল্যান্ডার বিক্রম। তার পরের পদক্ষেপেই ল্যান্ডারের ভিতর থেকে বেরিয়ে আসবে রোভার ‘প্রজ্ঞান’।
উপবৃত্তাকার কক্ষপথে থাকার ফলে এক বার চাঁদের সবচেয়ে কাছে ও এক বার সবচেয়ে দূরে চলে যাওয়ার সুযোগ পাবে চন্দ্রযান-২। এই কক্ষপথে পৌঁছনোর ফলে চাঁদের পিঠ থেকে চন্দ্রযান-২-এর উচ্চতাও অনেকটা কমে আসবে। তাই, যখন সবচেয়ে কাছে আসবে, তখন চাঁদের পিঠের বিভিন্ন এলাকার ছবি অনেক বেশি স্বচ্ছ ভাবে তুলতে পারবে ভারতের দ্বিতীয় চন্দ্রযান। তৃতীয় কক্ষপথে প্রদক্ষিণ করার সময়ে চন্দ্রযান-২ এবং চাঁদের মধ্যে সর্বাধিক দূরত্ব হবে ১৪১২ কিলোমিটার। আর সর্বনিম্ন দূরত্ব হবে ১৭৯ কিলোমিটার।
সোভিয়েত ইউনিয়ন, আমেরিকা, চিনের পর ভারতই হবে চতুর্থ দেশ, যারা চাঁদের পিঠে পা ছোঁয়াবে। আর ভারতই হবে প্রথম দেশ, যারা নামবে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে। ২২ জুলাই অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটায় ইসরোর সতীশ ধওয়ন মহাকাশ কেন্দ্র থেকে চাঁদের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিল চন্দ্রযান-২। গত ২০ আগস্ট ভারতীয় সময় সকাল সাড়ে ন’টায় চাঁদের কক্ষপথে প্রথম প্রবেশ করে চন্দ্রযান-২। তার পর তিনটি ধাপে ভারতীয় মহাকাশযানটি ঢুকে পড়ল চাঁদের তৃতীয় কক্ষপথে। ল্যান্ডার বিক্রম আলাদা হওয়ার আগে আরও দু’টি কক্ষপথে প্রদক্ষিণ করতে হবে চন্দ্রযান-২-কে। আর সেই কক্ষপথগুলি হবে বৃত্তাকার।