বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের আওতায় সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এক মহিলা দিনমজুরের ব্রেন টিউমারের জটিল ও সফল অস্ত্রোপচার করে নজির গড়ল একটি বেসরকারি হাসপাতাল। ওই মহিলার নাম শীতলা আঁকুরে নামে ওই মহিলা। তাঁর বাড়ি বীরভূম জেলার বোলপুরের আলসিডাঙা গ্রামে। তাঁর স্বামী যজ্ঞেশ্বর আঁকুরে (প্রতিবন্ধী)। দিনমজুরের কাজ করতেন তিনি। শীতলা আঁকুরের চিকিৎসা করার ক্ষমতা তাঁদের ছিল না। স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের সাহায্যে অস্ত্রোপচারের পর এখন সুস্থ আছেন তিনি।
চিকিৎসকরা জানান, ম্যানেন জানা নামে এই টিউমারটির সাইজ ছিল ২০০ সিসি। তবে যে আকার ধারণ করেছিল দ্রুত অস্ত্রোপচার না করলে সেটি ফেটে গেলে রোগীকে আর বাঁচানো সম্ভব হত না। সম্পূর্ণ বিনা খরচে রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের আওতায় এই অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। বাইরে এই অস্ত্রোপচার করলে অন্তত আড়াই থেকে ৬ লক্ষ টাকা খরচ হত বলে জানা গেছে।
শীতলাদেবীর ছেলে গণেশ আঁকুরে বলেন, “মায়ের যে ব্রেন টিউমার হয়েছিল, তা অস্ত্রোপচার করার ক্ষমতা আমাদের ছিল না। রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের আওতায় থাকায় সরকার আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। তাই এত বড় অস্ত্রোপচার সম্ভব হয়েছে। একটি পয়সাও খরচ হয়নি। এখন মা সুস্থ আছেন। বাড়ি ফিরতে চাইছেন”।
জানা গেছে, মাস খানেক আগে হঠাৎ শীতলা দেবীর শরীরের বাঁ দিকে খিঁচুনি শুরু হয়। বমি বমি ভাব দেখা দেয়। প্রচণ্ড দুর্বল হয়ে পড়েন। আর সেই সঙ্গে মাথায় ভীষণ যন্ত্রণা শুরু হয়। রামপুরহাটে চিকিৎসকের পরামর্শে তাঁর সিটিস্ক্যান করা হয়। তাতে ব্রেন টিউমার ধরা পড়ে। সেখানকার চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে ওই মহিলার ব্রেন টিউমার অস্ত্রোপচার করতে রাজি হন। কিন্তু সেখানে পরিকাঠামো নেই ভেবে রাজ্যের স্বাস্থ্য সাথী বিভাগ প্রথমে এই অস্ত্রোপচারে অনুমতি দেয়নি। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং চিকিৎসকরা পর্যাপ্ত পরিকাঠামো রয়েছে বলে দাবি করেন। তারপরই ওই বিভাগের অনুমতিতে ডি কুর্পা শঙ্কর ও আদিত্য প্রসাদ রায়ের নেতৃত্বে একটি চিকিৎসক দল এই অস্ত্রোপচার করেন। এই জটিল অস্ত্রোপচার করতে প্রায় ১২ ঘন্টা লেগেছে।