রাজনীতির আকাশ থেকে আর এক নক্ষত্র খসে পড়ল। কয়েকদিনের ব্যবধানেই দুই রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ জাতীয় রাজনীতি। সুষমা স্বরাজের পর অরুণ জেটলির মৃত্যুতে স্তম্ভিত দেশবাসী। টানা ১৫ দিনের লড়াই শেষ হয়ে গেল। সেই বর্ষীয়ান নেতার রাজনৈতিক আকাশের অভ্যুদ্বয় হয়েছে যখন জাতীয় রাজনৈতিক অবস্থা টালমাটাল। দেশে জরুরি অবস্থা চলছে। সেই সময় এই বর্ষীয়ান আইনজীবীর উত্তাল করেছিলেন।
তবে অরুণ জেটলি নিজে নির্বাচনে লড়েছেন হাতে গোনা কয়েকটি। এমনকি, ২০১৪ সালে প্রবল মোদী হাওয়াতেও অমৃতসর কেন্দ্র থেকে পরাজিত হন তিনি। জরুরি অবস্থার সময় তিনি ১৯ মাস জেল খেটেছেন আর সেই সময়ই এমন কিছু মানুষের সান্নিধ্য তিনি পেয়েছিলেন তা বাকি রাজনৈতিক জীবনে পাথেয় হয়েছিল। সেই তালিকায় আছে অটলবিহারী বাজপেয়ী, লালকৃষ্ণ আডবাণী, নানাজি দেশমুখের মতো প্রবাদ প্রতিম নেতারা। জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর এবিভিপি-র সর্বভারতীয় সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয় তাঁকে। এর পর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ওকালতির সঙ্গে সমান্তরাল ভাবে রাজনীতিকেও কেরিয়ার হিসাবে বেছে নেন তিনি।
২৮ ডিসেম্বর ১৯৫২ সালে দিল্লীতে জন্ম নিয়েছিলেন এই নেতা। পড়াশুনায় দুর্দান্ত এই ছেলেটি তরতর করে এগিয়েছেন জীবনে। নিজেকে আইনজ্ঞ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তারপর হটাৎই আসেন রাজনৈতিক মঞ্চে। তবে নির্বাচনে লড়ার ক্ষেত্রে অবশ্য ততটা সাফল্য পাননি অরুণ জেটলি। শেষবার নির্বাচন জিতেছিলেন ১৯৭৪ সালে দিল্লীর ছাত্র সংসদের নির্বাচনে। তারপর থেকে তিনি চলে গিয়েছিলেন মঞ্চের পিছনে। সেখান থেকেই তিনি ‘গেম চেঞ্জ’ করেছেন সবসময়। বহু নির্বাচনেই দলের হয়ে রণকৌশল এবং প্রচার কৌশল তৈরির কারিগর ছিলেন তিনি। কিন্তু, নিজে ভোটে লড়েননি।
প্রথম মোদী সরকারের অর্থ মন্ত্রক তো বটেই প্রতিরক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকের দায়িত্বও ছিল অরুণ জেটলির কাঁধে। কিন্তু, শরীরে বাসা বেঁধেছিল মারণ রোগ। একটু একটু করে সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরেও আসতে থাকেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ২০১৯ সালের ভোটে আর দাঁড়াননি তিনি। ৬৬ বছর বয়সেই শেষ হয়ে গেল তাঁর রাজনৈতিক জীবন। চলে গেলেন সবকিছু অন্তরালে। সব চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে পরলোকে পাড়ি দিলেন অরুণ জেটলি।