মোদী সরকারের দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুর দিনই কানাঘুষো শোনা গিয়েছিল যে ‘আর্থিক সংস্কারের’ নামে নামে এবার এমনই এক তুঘলকি সিদ্ধান্ত নিতে পারে কেন্দ্রীয় সরকার, যার ফলে ১০০ দিনের মধ্যেই কোপ পড়বে দেশের ৪২ রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার ওপর। সমস্ত জল্পনাকে সত্যি করে বাজেট পেশের দিনই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল যে, রেল এবং বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলিকে বেসরকারি হাতে তুলে দিতে চাইছে কেন্দ্র। ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে রেলের বেসরকারিকরণের কাজ। তবে এরই মধ্যে এবার আরও এক তুঘলকি সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের। এবার নিলামের পথে দেশের ৪৬টি কয়লাখনি। যার মধ্যে অধিকাংশই যাচ্ছে বেসরকারি হাতে।
ভারতে কয়লা সঞ্চয় পর্যাপ্ত হলেও চাহিদার তুলনায় উৎপাদন কম হওয়ায় গত বছরে প্রায় ২০ কোটি টন কয়লা আমদানি করতে হয়েছে। আমদানি কমাতে খনি বণ্টন হওয়ার পর থেকে দ্রুত উৎপাদন চালু করার লক্ষ্যে কেন্দ্র মাইনস অ্যান্ড মিনারেলস (ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রেগুলেশন) আইন (এমএমডিআর আইন) সংশোধন করার পরিকল্পনা করেছে। বুধবার কলকাতায় বণিকসভা ফিকি-র সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত এক আলোচনাসভায় কেন্দ্রীয় কয়লা সচিব সুমন্ত চৌধুরী জানান, কেন্দ্র ৪৬টি কয়লা খনি নিলাম ও বণ্টন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যার মধ্যে ৪২টির প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে।
জানা গেছে, এই ৪৬টি খনির মধ্যে ৩০টি নিলামের মাধ্যমে বেসরকারি ক্ষেত্রকে এবং ১৬টি কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের রাষ্ট্রায়ত্ত বিভিন্ন সংস্থাকে চলতি বছরের মধ্যেই বণ্টন করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে কয়লা মন্ত্রক। এই ৪৬টি খনি যারা পাবে তারা উৎপাদিত কয়লার নিজেদের কাজে অথবা নির্ধারিত প্রয়োজনে ব্যবহারের পর ২৫ শতাংশ যে কোনও দামে বাজারে বিক্রি করতে পারবে। এ নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভা ইতিমধ্যেই অনুমোদন দিয়ে দিয়েছে বলে জানা গেছে। স্বভাবতই এ হেন সিদ্ধান্ত নিয়ে যে ফের সমালোচনার মুখে পড়তে হতে পারে মোদী সরকারকে, তা বলাই বাহুল্য।