কেন্দ্রীয় বাজেট ঘোষণার পর পরই শেয়ার বাজারের ধস রীতিমতো ঝাঁকুনি দিয়েছিল লগ্নিকারীদের। তারপর থেকেই দুশ্চিন্তার মেঘে ঢেকেছে লগ্নীর আকাশ। মোদী সরকারের বাজেটে যেমন বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়াতে তেমন কোনও উদ্যোগ চোখে পড়েনি। ঠিক তেমনই চাহিদার মানোন্নয়নেও কোনও ইতিবাচক পদক্ষেপ নিতে পারেনি কেন্দ্র। আর এই দুয়ের ফলেই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে দেশের শিল্প সংস্থাগুলিকে। শুধু গাড়ি বা আবাসন নয়। এবার অর্থনীতির গতি কমার ছবি ফুটে উঠতে শুরু করল বাকি সব ক্ষেত্রেই।
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তথ্য অনুযায়ী, খনি থেকে জ্বালানি, বস্ত্র থেকে বিদ্যুৎ— প্রায় সব ক্ষেত্রে চলতি অর্থবর্ষের শুরু থেকেই ঋণ নেওয়া কমতে শুরু করেছে। এপ্রিল থেকে জুনে ভারী শিল্পের ঋণ আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২.৬ শতাংশ কমেছে। এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে, শুধু গাড়ি শিল্পে সঙ্কট দেখা দেওয়ায় যদি ১০ লক্ষ মানুষের কাজ যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়, তা হলে বাকি সব ক্ষেত্রে সঙ্কট দেখা দিলে পরিস্থিতি কোথায় পৌঁছতে পারে? কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরা প্রশ্ন তুলেছেন, ‘শিল্প সংস্থাগুলি সমস্যায়। কর্মী ছাঁটাই হচ্ছে। তার পরেও বিজেপি সরকার মৌন। দেশের অর্থনীতির এই শ্লথগতির জন্য কে দায়ী?’
প্রসঙ্গত, গাড়ি বিক্রি কমায় কমেছে গাড়ি কেনার জন্য ব্যাঙ্ক থেকে ঋণও। সেই সঙ্গে ১৮টির মধ্যে ১৬টি শিল্প ক্ষেত্রেই ঋণ কমেছে। এর মধ্যে যেমন খনি, সড়ক, বিদ্যুৎ, নির্মাণের মতো পরিকাঠামো ক্ষেত্র রয়েছে, তেমনই রয়েছে বস্ত্র, কাগজ, চামড়া, পেট্রোপণ্য, গয়না, ইঞ্জিনিয়ারিং, ইস্পাতের মতো শ্রম-নিবিড় ক্ষেত্র। যেখানে বহু মানুষের কর্মসংস্থান হয়। উল্লেখ্য, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সুদ কমিয়ে শিল্পের জন্য সুদের হার কমানোর পথ তৈরি করলেও ঋণ নেওয়া বাড়েনি। যার অর্থ, সমস্যা সুদের হারে নয়। নতুন লগ্নিতে সদিচ্ছার অভাব। শিল্পপতিরাও বলছেন, বাজারে বিক্রিবাটা হলেই নতুন লগ্নীর প্রয়োজন পড়ে। তখন সুদ চড়া থাকলেও ঋণ নিতে কেউ পিছু হঠে না। কিন্তু বিক্রিবাটাই নেই।