বাপরে! কি দস্যি মেয়ে!
মেয়ের দস্যিপনায় লাগাম পরাতে ক্যারাটের ক্লাসে ভর্তি করেছিলেন পূর্বস্থলীর তেলেনিপাড়ার মদন সরকার। মদনবাবুর এই সিদ্ধান্ত তাঁর ছোট মেয়ে নূপুরের জীবন বদলে দিয়েছে। ক্যারাটের জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক মঞ্চে বারবার নূপুর দেশের তেরঙা ঝাণ্ডা তুলে পূর্বস্থলীর প্রত্যন্ত তেলেনিওপাড়া গ্রামকে ধন্য করেছে। পড়াশোনাতেও ভাল ফল করে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের গণ্ডি পেরিয়েছে নূপুর। নূপুরের এই কৃতিত্বকে কুর্নিশ জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। নূপুরকে এই বছর ‘কন্যাশ্রী’ সম্মানে ভূষিত করলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
দস্যি মেয়ে নূপুর যারপরনাই খুশি এই সাফল্যে। নূপুরের বেশি ভাল লাগছে দেশের অন্যতম ‘কন্যাশ্রী’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত থেকে কন্যাশ্রী শিরোপা পেয়ে। নূপুরের বাড়ির লকারে ক্যারাটের অগুনতি পদকের মধ্যে উজ্জ্বল ২০১৮ সালে অল এশিয়া ক্যারাটে প্রতিযোগিতার ব্রোঞ্জ পদক আর ২০১৬ ও ২০১৭ সালে ক্যারাটেয় বেঙ্গল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পদক। আগামী ৭ ও ৮ সেপ্টেম্বর কেরলে বসছে ক্যারাটের জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপের আসর। সেখানে যোগ দেবে নবদ্বীপ বিদ্যাসাগর কলেজের স্নাতকের প্রথম বর্ষের পড়ুয়া নূপুর। এখন তারই প্রস্তুতি চলছে জোরকদমে।
স্থানীয় পারুলিয়া কুলকামিনী উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্রী নূপুরের মার্কশিটগুলিও বাঁধিয়ে রাখার মত। এবার উচ্চমাধ্যমিকে ৮০ শতাংশের উপর নম্বর পেয়ে পাশ করেছে। প্রিয় বিষয় দর্শনে পেয়েছে ৯৯ শতাংশ নম্বর। উচ্ছ্বসিত প্রধান শিক্ষক তথা এলাকার বিধায়ক প্রদীপ সাহা বলছিলেন, ‘নূপূর সর্বগুণান্বিতা। ক্যারাটে বা পড়াশোনায় সবাইকে কাত করে দেওয়াই নয়। নূপুর অসাধারণ ছবি আঁকে। গানের গলাটিও ভারী মিঠে।’
নূপুরের এই অভাবনীয় সাফল্যে খুশি তেলেনিওপাড়া থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট পূর্বস্থলী থানা ও কালনা মহকুমা।নূপুরের বাবা মদন সরকার, মা চাঁপা সরকার বলছিলেন, ‘ও যেটা যখন করে মন–প্রাণ ঢেলে করে। তা ক্যারাটে অনুশীলনই হোক, আর পড়াশোনাই হোক। তার সুফল পেল।’