‘এই যে যারা মাথায় ফেট্টি বেঁধে ঘুরে বেড়াচ্ছ, তাদের আবারও বলে রাখি, আগুন নিয়ে খেলো না’। মঙ্গলবার দীঘায় কনভেনশন সেন্টারের উদ্বোধন করে এভাবেই বিজেপিকে তুলোধোনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী জানান, পুরীর সৈকত সাজানো-গোছানো, বাঁধানো না থাকা সত্ত্বেও জগন্নাথ মন্দিরের টানে দেশ-বিদেশের বহু পর্যটক সেখানে যায়। দীঘায় জগন্নাথ মন্দির গড়ে উঠলে ওই মন্দিরকে কেন্দ্র করে পর্যটকের ভিড় আরও বাড়বে।
দীঘায় জগন্নাথ মন্দির হলেও কেবল ধর্মীয় পর্যটন কেন্দ্র হিসাবেই নয়, গোয়ার আদলেও দীঘা সৈকতকে তুলে ধরতে চান মুখ্যমন্ত্রী মমতা। তাই এদিন কনভেনশন সেন্টারের উদ্বোধনের পর দীঘায় মেরিনা সৈকত গড়ে তোলার কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘গোয়ার মডেলে গন্তব্য হয়ে উঠবে দীঘা। দীঘার দীর্ঘ ৭ কিলোমিটার সৈকতকে সাজিয়ে মেরিনা বিচ করে তোলা হবে।’ দীঘাকে গোয়া বানানোর স্বপ্ন মমতার নতুন নয়। রাজ্যে প্রথমবার ক্ষমতায় আসার পরই কলকাতাকে লন্ডন এবং দীঘাকে গোয়া হিসাবে গড়ে তোলার কথা ঘোষণা করেছিলেন মমতা। সেই ঘোষণার বাস্তবায়নের জন্য ইতিমধ্যে দীঘার খোলনলচে অনেকটাই পাল্টে দিয়েছেন তিনি। দীঘার পুরো সৈকত বাঁধিয়ে দিয়ে সেখানে বিশ্ববঙ্গ লোগো বসিয়ে, আলো-ঝরনার বাহার এমনকি ছোটদের খেলার জন্য পার্কও তৈরি হয়েছে। এবার পুরোদমে দীঘাকে গোয়া করে তুলতে মেরিনা বিচ গড়ে তোলার কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা।
শুধু মেরিনা বিচ নয়, দীঘার সমুদ্রে ‘সি-প্লেন’ নামানোরও পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘দীঘায় সি-প্লেন চালু হলে পর্যটক আরও বাড়বে।’ এছাড়া সৈকতের কাছাকাছি আন্তর্জাতিক মানের দুটি পার্কিং প্লাজা এবং দীঘা-কলকাতা বৈদ্যুতিন বাস চলাচলের ব্যবস্থাও শীঘ্র করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। তাঁর পুরোনো প্রকল্প, তাজপুর বন্দর তৈরির কাজও এবার কেন্দ্রের সাহায্য ছাড়াই শুরু হবে বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
সমুদ্রের পাড়ে যাতে কোনওভাবেই প্লাস্টিক ব্যবহার করা না হয়, সেদিকে নজর রাখার নির্দেশ দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ পর্যটনের মাধ্যমে দিঘার অর্থনীতির উন্নতি করাই যে একমাত্র লক্ষ্য, তাও বারবারই নিজের বক্তৃতার মাধ্যমে বুঝিয়ে দিয়েছেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান৷