সম্মান করেন, তাই প্যারাটিচারদের দিকে তাকিয়ে ৪ হাজার থেকে বেতন বাড়িয়ে ১০ হাজার করা হয়েছে। এভাবে ক্লাস বয়কট করে, কালো ব্যাজ পরে পথে বসে আন্দোলনের পথে হেঁটে দাবি আদায় বরদাস্ত করা যাবে না। সোমবার হাওড়ার প্রশাসনিক বৈঠকে পার্শ্বশিক্ষকদের আন্দোলন নিয়ে এমনই কড়া বার্তা দিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি সরকারকে না জানিয়ে কলেজগুলিতে নিয়োগ করা হচ্ছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
মূলত সমগ্র হাওড়ার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতেই এদিন হাওড়ার শরত্ সদনে প্রশাসনিক বৈঠকে বসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হাওড়ার রাস্তাঘাট, যত্রতত্র ফ্ল্যাট নির্মাণ, নিকাশি ব্যবস্থা নিয়ে পুরনিগম ও কাউন্সিলরদের প্রতি তিনি যেমন ক্ষোভ বর্ষণ করেন, তেমনই হাওড়া সহ অন্যান্য জেলার কলেজগুলিতে নিয়োগ ও পড়াশোনার মান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। হাওড়া সহ রাজ্যের অধিকাংশ কলেজেই বেআইনিভাবে, সরকারকে অগোচরে রেখে ক্লার্ক সহ অধ্যাপক-অধ্যাপিকা নিয়োগ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। একই সঙ্গে পার্শ্বশিক্ষকদের আন্দোলন নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘২০১২ সালে প্যারাটিচারদের বেতন ছিল মাত্র ৪ হাজার টাকা। ২০১৮এ তা আমরা বাড়িয়ে ১০ হাজারেরও বেশি করে দিয়েছি। বছর বছর বেতনবৃদ্ধি তো সম্ভব নয়। তাহলে কেন্দ্রের কাছে গিয়ে বলুন, আলাদা করে এরাজ্যের জন্য রিজার্ভ ব্যাংক করে দিতে। তাহলে আমি সব টাকা দিয়ে দেব’।
এদিন বৈঠকের আগেই ২৯ নং ওয়ার্ড এলাকার একটি বস্তি পরিদর্শন করেন মুখ্যমন্ত্রী। তার অবস্থা দেখেই রেগে গিয়েছিলেন। তারই প্রতিফলন পড়ল প্রশাসনিক বৈঠকেও। কেন জেলার বস্তিগুলির উন্নয়ন হয়নি, শৌচাগার নির্মাণ, নিকাশি ব্যবস্থা, পানীয় জল সরবরাহ এখনও স্বাভাবিক নয়, একের পর এক প্রশ্ন তুলে হাওড়া পুরনিগমের প্রশাসক বোর্ডের প্রধানের কাছে জবাব চান তিনি। জল সমস্যা সমাধানে হাওড়ার ওলাবিবিতলায় পাম্পিং স্টেশন তৈরির কাজ হঠাত থমকে গেল কেন, সেই প্রশ্নের উত্তর না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মমতা।
পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে তিনি কড়া নির্দেশ দেন, প্রতিটি পুরসভায় অডিট হওয়া উচিত। অর্থদপ্তরের অনুমতি না নিয়ে কাজ করলে এবার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা হবে। প্রয়োজনে ফৌজাদারি মামলাও দায়ের করা হবে। এপ্রসঙ্গেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি নিজে কখনও অর্থদপ্তর থেকে ফাইল পাশ না করিয়ে কোনও কাজে হাত দিই না। কারণ, সেটাই নিয়ম। আর আপনারা কেন অনুমতি ছাড়াই কাজে হাত দিচ্ছেন? যাদের নিয়োগ করছেন, তাঁরা তো আমাদের দায়িত্বের মধ্যে এসে পড়ছেন। জানেন কি, এঁদের নিয়োগটাই বেআইনি? সরকারের টাকা এভাবে নিজেদের মতো করে ব্যবহার করতে পারেন না আপনারা।’ তিনি এই হুঁশিয়ারিও দেন, যাতে কেউ বেআইনি কোনও ফাইলে সই না করেন।