কপিলমুনির মন্দির তীর্থযাত্রীদের কাছে এক পুণ্যস্থান। প্রতি বছর গঙ্গাসাগর মেলার সময় উপচে পড়ে ভিড়। তবে এই কপিলমুনির মন্দিরের সামনে তাঁর স্থায়ী মূর্তি নেই। সেই আর্জি নিয়ে জেলা প্রশাসন থেকে রাজ্য সরকারের কাছে কপিলমুনি মন্দির কমিটি ও তীর্থযাত্রীরা পৌঁছে গেছে। তার পরিপ্রেক্ষিতে এবার গঙ্গাসাগর মেলা শুরুর সময় সেই মূর্তি বসানোর পরিকল্পনা হয়েছে। সেইমতো টেন্ডার ডেকে ওয়ার্ক অর্ডারের কাজ শুরু করে দিয়েছে গঙ্গাসাগর-বকখালি উন্নয়ন পর্ষদ। আগামী বছর সেই মূর্তির উদ্বোধন হবে মুখ্যমন্ত্রীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত দিয়ে।
শুক্রবার আলিপুরে সাগরমেলার সার্বিক কাজ কে কীভাবে এবং কতদিনের মধ্যে শেষ করতে পারবে সে ব্যাপারে বৈঠক ডেকেছিলেন জেলাশাসক পি উলগানাথন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন সুন্দরবন পুলিশ জেলার সুপার বৈভব তেওয়ারি। আলোচনার সময় মেলায় নতুন কাজ হিসেবে কপিলমুনির মূর্তির বিষয়টি সামনে আসে।
গত মেলার সময় মন্দিরের বাইরে ডাল্লা সেন্টারের বাইরে ভগীরথে শঙ্খ বাজিয়ে গঙ্গা আনার বিষয়টি মুরাল চিত্রের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। তার উদ্বোধন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিনের বৈঠকে আলোচনার সময় জেলাশাসক নতুন কী কাজ হচ্ছে সে ব্যাপারে জানতে চাইলে গঙ্গাসাগর-বকখালি উন্নয়ন পর্ষদের এগজিকিউটিভ অফিসার জয়ন্ত মণ্ডল বলেন, এবারও নতুন কিছু করা হচ্ছে। বিশেষ করে মন্দিরের বাইরে ফাইবার গ্লাসের মহর্ষি কপিলমুনির মূর্তি বসানো হচ্ছে। হাওড়ার একটি সংস্থাকে ওই কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সংলগ্ন এলাকার ছোট পুকুরটিতে নতুন করে স্থায়ী ফোয়ারা ও তার সঙ্গে আলো দিয়ে সাজানো হচ্ছে এবার। এছাড়াও ৩ নম্বর রাস্তার ধারে ভারত ও পশ্চিমবঙ্গের শাস্ত্রীয় নৃত্য ও লোকনৃত্যকে মুরাল চিত্রের মাধ্যমে তুলে ধরা হবে। স্থায়ীভাবে সেই কাজও সাগরমেলার আগেই শেষ হয়ে যাবে।
এদিনের বৈঠকে সাগরের বিধায়ক বঙ্কিম হাজরা কাকদ্বীপ লট-৮ থেকে কচুবেড়িয়া পর্যন্ত পলি তোলার প্রসঙ্গ তোলেন। তিনি বলেন, এদিনই সেচ দপ্তরের মন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর আলাদা বৈঠক হয়েছে। মন্ত্রী তাঁদের আশ্বস্ত করেছেন, যা যা সমস্যা ছিল, তা মিটে গিয়েছে। ২৩ আগস্টের মধ্যে দ্রুততার সঙ্গে পলি কাটার কাজ শুরু হয়ে যাচ্ছে। ফলে মেলার আগেই স্থায়ী জেটিও এলসিটি সব জায়গাতে চ্যানেলগুলি পরিষ্কার হয়ে যাবে। এদিন দুপুর আড়াইটে থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টা পর্যন্ত মেলা নিয়ে বৈঠক চলে। জেলাশাসক, অতিরিক্ত জেলাশাসক, মহকুমা শাসক, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি থেকে শুরু করে জনস্বাস্থ্য, পূর্ত , সেচ, বিদ্যুৎ, অসামরিক, সুন্দরবন উন্নয়ন পর্ষদের আধিকারিকরা কোথায় কোথায় কী কী কাজ হচ্ছে, তার বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেন। পাশাপাশি গতবার কাজ করতে গিয়ে কোথায় কোথায় সমস্যা হয়েছিল তার উল্লেখ করে সংশোধনের কথা বলা হয়। এইবার বেশ তোড়জোড় নিয়েই শুরু হচ্ছে গঙ্গা সাগর মেলার আয়োজন। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে শুরু হয়ে গেছে প্রস্তুতি। খুশি কপিলমুনি মন্দির কমিটি থেকে তীর্থযাত্রীরা সকলে।