রাতভর জোরালো বৃষ্টির পর, সকালেও তখন এক-দু ফোঁটা পড়ছে আকাশ থেকে। সেই অবস্থায় এক শ্রমিকের ঘরে ঢুকে কয়েক লিটার হাঁড়িয়া খেয়ে নেয় সে। এর পরেই নেশায় বুঁদ হয়ে শুরু করে তাণ্ডব। তিনি আর কেউ নন, এক মস্ত দাঁতাল।
স্বাধীনতা দিবসের ছুটি কাটিয়ে শুক্রবার সকালে তখন কাজে যোগ দেওয়ার তাড়া দলগাঁও চা-বাগানের শ্রমিকদের। আচমকা সবাইকে তাক লাগিয়ে প্রায় চোদ্দ ফুটের এক বুনো দাঁতালের আবির্ভাব মহল্লায়। জঙ্গলের পথ ভুলে টলায়মান পায়ে একবার এশিয়ান হাইওয়ের এ দিক, আর একবার ও দিক ছুটে বেড়াতে শুরু করে। কখনও আবার রাস্তার উত্তর প্রান্তে বাগানে ছুটতে থাকে দাঁতালটি। প্রাণভয়ে পালাতে থাকেন ভয়ার্ত শ্রমিকরা। শিকেয় ওঠে বাগানের স্বাভাবিক কাজকর্ম।
বাগানের বাসিন্দা সুনীল ওঁরাও বলেন, “রাতের অন্ধকারে আমাদের বাগানে প্রায়ই হানা দেয় বুনোহাতির দল। কিন্তু সাতসকালে ওই মাতাল হাতির আচরণে আমরা হতচকিত হয়ে পড়েছিলাম। আর এত উঁচু দাঁতাল, আগে কখনও দেখিনি”। উত্তরবঙ্গের অতিরিক্ত প্রধান মুখ্যবনপাল বিপনকুমার সুদ বলেন, “হাঁড়িয়ার বিষয়ে বন দফতরের পক্ষ থেকে বলা হলেও শ্রমিকরা কিছুতেই সচেতন হচ্ছেন না। ফলে বিপদ বেড়েই চলেছে”।
রাস্তা পেরোনোর সময় ওই মত্ত দাঁতাল কয়েকটি লরিকে আক্রমণ করে। মাতাল হাতিকে বাগে আনতে তখন ভরা বর্ষায় গলদঘর্ম অবস্থা পুলিশ ও বনকর্মীদের। প্রায় চার ঘণ্টার চেষ্টায় শেষ পর্যন্ত ওই মাতাল দাঁতালকে দলগাঁওয়ের জঙ্গলের দিকে পাঠানো সম্ভব হয়।