আজ ১৫ আগস্ট। দীর্ঘ ১৯০ বছরের পরাধীনতা কাটিয়ে ১৯৪৭ সালের এই দিনে নতুন সূর্য উঠেছিল ভারতের আকাশে। স্বাধীনতার স্বাদে মাতোয়ারা ছিল দেশ। এই স্বাধীনতার পিছনে ছিল অসংখ্য সংগ্রাম, বহু মানুষের বলিদান। তবে এই দিনটির গুরুত্ব বা কেনই বা এদিনটি স্বাধীনতা দিবস হিসেবে ঠিক করা হয়েছিল, সেই ইতিহাস অনেকেরই অজানা।
পরাধীন ভারতের শেষ ভাইসরয় লর্ড মাউন্টব্যাটেনের চুক্তি অনুযায়ী ঠিক হল ব্রিটিশ পার্লামেন্টকে ১৯৪৮ এর ৩০ জুনের মধ্যে সব ক্ষমতা হস্তান্তরিত করতে হবে। ভাইসরয় কথা দিয়েছিলেন রক্তপাত ছাড়াই যেন ক্ষমতার হস্তান্তর হয়, সেদিকে খেয়াল রাখবেন তাঁরা, যদিও তেমনটা হয়নি আদতে। তাঁর দাবি ভুল প্রমাণিত হওয়ার পর আত্মপক্ষ সমর্থনে মাউন্টব্যাটেন লিখেছিলেন, “যেখানেই সাম্রাজ্যের শাসনের অন্ত হয়েছে, সেখানেই রক্তপাত হয়েছে। এ দাম দিতেই হবে।”
তবে এইদিনটি পছন্দ করার পেছনে কি কারণ ছিল? লর্ডমাউন্টব্যাটেনকে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট ক্ষমতা হস্তান্তরের যে আদেশপত্র দিয়েছিল তাতে বলা ছিল এই কাজ শেষ করতে হবে ৩০ জুন, ১৯৪৮-এর মধ্যে। এ ব্যাপারে সি রাজাগোপালাচারীর বক্তব্য প্রণিধানযোগ্য। তিনি বলেছিলেন, ইংরেজরা যদি ১৯৪৮ সালের জুন মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করত, তাহলে হস্তান্তর করার মত কোনও ক্ষমতাই তাদের হাতে থাকত না। ফলে মাউন্টব্যাটেন সে কাজ এগিয়ে এনেছিলেন ১৯৪৭ সালের অগাস্টে।
১৯৪৭ এর ৪ জুলাই ব্রিটিশ পার্লামেন্টের হাউস অব কমনসে প্রস্তাবিত হল ভারতের স্বাধীনতা বিল। দিন পনেরোর মধ্যেই পাশ হল বিল। এই বিল পাশের মধ্যে দিয়েই প্রায় দু’শ বছরের পরাধীনতার অবসান হল। দু সপ্তাহের মধ্যেই তা পাশ হয়ে যায়। এর ভিত্তিতে ভারতে ১৯৪৭ সালের ১৫ অগাস্ট ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্ত হয় এবং তৈরি হয় ভারত ও পাকিস্তান।