কেন্দ্রীয় সরকার চক্রান্ত করে বাংলায় দুর্গাপুজো বন্ধ করে দিতে চাইছে। পুজো কমিটিগুলিকে আয়কর নোটিসের প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকাল থেকে সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারে হিন্দ সিনেমাহলের বিপরীতে আজ সকাল ১০টা থেকে অবস্থান বিক্ষোভে সামিল হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের বঙ্গ জননী । রয়েছেন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, কাকলি ঘোষ দস্তিদার, নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়রা। এছাড়াও রয়েছেন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। আজ সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এই অবস্থান বিক্ষোভ চলবে। গত রবিবারেই এই কর্মসূচীর কথা ফেসবুকে জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এই অবস্থান বিক্ষোভ প্রসঙ্গে মমতা লেখেন, “আয়কর দফতর অনেক দুর্গাপুজো কমিটিকে কর দেওয়ার জন্য নোটিস পাঠিয়েছে। আমরা আমাদের সব জাতীয় উৎসবকে নিয়ে গর্বিত। উৎসব সকলের। কোনও পুজোতে ট্যাক্স বসানো হোক, আমরা চাই না। এটা সংগঠকদের ওপর একটি বাড়তি বোঝা হবে। বাংলা সরকার গঙ্গাসাগর মেলার ওপর থেকে ট্যাক্স সরিয়ে নিয়েছে। আমাদের দাবি, দুর্গা পুজো ও কমিটিগুলির ওপর কোন রকম ট্যাক্স বসানো চলবে না।”
মেয়র ফিরহাদ হাকিম স্পষ্ট বলেন, “পুজো করার ক্ষেত্রে কোনও কমিটিরই কোনও ব্যক্তিগত স্বার্থ নেই। কেউ এর মাধ্যমে ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করতে আসেন না। যদি কেউ ব্যক্তিগত ব্যবসা বৃদ্ধির কথা ভাবতেন, তাহলে তাঁর কাছে আয়কর নোটিশ আসতে পারত। কিন্তু এক্ষেত্রে এটি একেবারেই বেআইনি।” কেন্দ্রকে তাঁর স্পষ্ট বার্তা, ধর্মের ওপর এই আঘাত তাঁরা মেনে নেবেন না৷
তৃণমূলের বক্তব্য, গেরুয়া বাহিনীর থেকে পুজো কমিটিগুলি মুখ ফিরিয়ে নেওয়াতেই এখন কেন্দ্রীয় সংস্থাকে দিয়ে চাপ তৈরি করে তাদের বশ্যতা স্বীকার করানোর চেষ্টা চলছে৷ এই নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদারও। তিনি বলছেন, “পুজো কমিটিগুলিকে কেন ডেকে এভাবে হেনস্থা করা হল? দুর্গাপুজো মানেই বাঙালি তথা বাংলার প্রত্যেকটা মানুষের কাছে একটা আবেগ। এর মাধ্যমে বাঙালির আবেগকে আঘাত করা হয়েছে। কেন পুজো কমিটিগুলির সময় নষ্ট করা হয়েছে?”
রাজনৈতিক চাপানউতোরে মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিবাদের পাশে দাঁড়াচ্ছে কলকাতার বেশ কয়েকটি নামী পুজো কমিটি। আর এই বিক্ষোভের মাধ্যমেই আরও একবার কেন্দ্রের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে পা বাড়ালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজকের এই অবস্থান বিক্ষোভ আরও একবার প্রমাণ করে দিল কেন্দ্র যতই বাংলার শান্তি নষ্টের ষড়যন্ত্র করুক না কেন, মমতার দাপটে তা প্রতিবার আজকের মতই ভেস্তে যাবে।