ইন্দিরা গান্ধীর পর তিনিই দ্বিতীয় নারী হিসাবে পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। কুলভূষণ যাদবের হয়ে আন্তর্জাতিক আদালতে ভারতের অবস্থান স্পষ্ট করা থেকে শুরু আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে পাকিস্তানকে কোণঠাসা করে ক্রমে কুলভূষণ যাদবের বিষয়টিকে আরও শক্ত ভিতের উপর দাঁড় করিয়েছিলেন তিনি। গতকাল সেই সুষমা স্বরাজের মৃত্যুতেই রাজনীতির মঞ্চে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। তবে আশ্চর্য সমাপতন। সুষমা তাঁর জীবনের শেষ টুইটে লিখেছিলেন, ‘ধন্যবাদ প্রধানমন্ত্রী। এই দিনটা দেখার জন্যই বোধহয় আমি বেঁচে ছিলাম। ধন্যবাদ, ধন্যবাদ আপনাকে।’ তাহলে কি মৃত্যু দেখতে পাচ্ছিলেন সুষমা? হঠাৎ তাঁর মৃত্যুর খবর আর শেষ টুইট, সব মিলিয়ে এক অদ্ভুত গল্প যেন তৈরি হল সুষমাকে ঘিরে। না হলে এমন টুইট শেষ কথায় লিখবেন কেন তিনি? রাজনীতি থেকে তাহলে কী আর কিছু পাওয়ার ছিল না তাঁর?
ছিল না হয়ত। ক্রমে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব হিসেবে নিজেকে সরিয়ে নিতে চাইছিলেন তিনি। অনুরাগীদের অনেকেই বলতেন, তিনি মোদী শিবিরের লোক নন। তাই ক্রমেই বিজেপির অন্দরে একঘরে হয়ে পড়ছিলেন তিনি৷ ফলে রাজনীতির থেকে তাঁর একটা দূরত্ব তৈরি হওয়া স্বাভাবিক ছিল। আর এই কারণেই হয়ত ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন তিনি। বিদেশ মন্ত্রক এত সাফল্যের সঙ্গে সামলানোর পরেও নিজেই ঘোষণা করলেন, ভোটে দাঁড়াবেন না তিনি। তারপর ক্রমে রাজনীতির আঙিনা থেকে সরিয়ে নিলেন নিজেকে। আর তারপরেই মৃত্যুর কয়েকঘণ্টা আগে এল এ হেন টুইট। তবে ‘এই দিনটা দেখার জন্যই বোধহয় আমি বেঁচে ছিলাম’- এই কথাটার আড়ালে কি অন্য কোনও বার্তা দিতে চেয়েছিলেন তিনি? মিলবে না আর এই প্রশ্নের উত্তর। কারণ সমস্ত উত্তর সঙ্গে নিয়েই মহাসিন্ধুর ওপারে পাড়ি দিয়েছেন সুষমা।