বেশ কয়েকদিন ধরে উন্নাও কান্ড নিয়ে তোলপাড় গোটা দেশ। সেখানে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। এছাড়াও প্রশ্ন উঠেছে ওই ধর্ষণকান্ডে বিজেপি বিধায়কের যোগ নিয়ে। চাপের মুখে পড়ে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করলেও প্রশ্ন থাকছে অনেক। এইবার উত্তরপ্রদেশ পুলিশকে সেইসব প্রশ্নবাণে বিদ্ধ করল একাদশ শ্রেণীর এক ছাত্রী।
প্রসঙ্গত, উন্নাও ধর্ষণকাণ্ডে বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সেনগর গ্রেফতার হওয়ার পরেও তদন্ত নিয়ে হিমশিম উত্তরপ্রদেশ পুলিশের কয়েকজন আধিকারিক বুধবার বরাবাঁকির আনন্দ ভবন স্কুলে নারী নিরাপত্তার পাঠ দিতে যান। সেখানে তাঁদের উন্নাওকাণ্ডের প্রেক্ষিতে নারী সুরক্ষার বাস্তবতা সম্পর্কে সরাসরি প্রশ্ন করে একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রী। পুলিশ কর্তাদের উদ্দেশে সে বলে, ‘আপনারা বলছেন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমরা যেন প্রতিবাদ জানাই। আমরা জানি, সম্প্রতি এক তরুণীকে ধর্ষণ করেন এক বিজেপি নেতা।’
এমনকি সড়ক দুর্ঘটনায় নিগৃহীতার পরিবারের দুই সদস্যের মৃত্যু এবং তাঁর ও তাঁর আইনজীবীর গুরুতর আহত হওয়ার পিছনে বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সেনগরের ভূমিকা সম্পর্কে সে উল্লেখ করে জানায়, ‘সবাই জানে ওটা নিছক দুর্ঘটনা নয়। ট্রাকের নম্বরপ্লেটে কালো রং মাখানো ছিল। সাধারণ মানুষ আক্রান্ত হলে প্রতিবাদ করা এক জিনিস, কিন্তু প্রভাবশালী কেউ জড়িত থাকলে কী হবে? আমরা জানি, কোনও পদক্ষেপ করা হবে না। যদি বা কিছু করা হয়, তা কোনও কাজে লাগবে না।’
শুধু এখানেই থেমে না থেকে মুনিবা কিদওয়াই নামে ওই ছাত্রীটি আরও বলেন, ‘আমরা জানি, উন্নাও ধর্ষণকাণ্ডে নিগৃহীতা তরুণী সংকটজনক অবস্থায় রয়েছেন। আমরা যদি প্রতিবাদ জানাই, সেক্ষেত্রে আপনারা কী ভাবে আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন? আমাদের সুবিচার দিতে পারবেন? কী নিশ্চয়তা রয়েছে যে, আমার কিছু হবে না?’
প্রায় এক মিনিট ধরে করা ছাত্রীর প্রশ্নের সঙ্গে সঙ্গে হাততালিতে ফেটে পড়ে তার সহপাঠীরা। কিন্তু পড়ুয়ার প্রশ্নবানে জর্জরিত পুলিশ আধিকারিকরা কোনও উত্তর দিতে পারেননি। গোটা কথোপকথনই ধরা পড়েছে ভিডিয়ো ফুটেজে। এই ঘটনা সত্যিই এক দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করল। নানা ঘটনায় বরাবর পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তাঁদের পক্ষপাতিত্বতা নিয়ে প্রশ্ন দানা বাধে। তবে এই অকুতোভয় ছাত্রীর চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়া বাস্তবকে বাহবা দিচ্ছেন নানা মহলে।