লোকসভা ভোটের ফলপ্রকাশের পরই জার্সি বদলে বিজেপিতে নাম লেখানোর হুজুগ শুরু হয়েছে রাজ্যে। আর সেই সুযোগে জেলায় জেলায় টাকা তোলার কারবার ফেঁদেও বসেছে বিজেপির নিচুতলার নেতাদের একাংশ। দিন কয়েক আগেই প্রকাশ্যে এসেছিল, সদস্য সংগ্রহ অভিযানকে শিখণ্ডী করে রাজ্যের একাধিক জেলা থেকে বিজেপির টাকা তোলার কথা। তবে এবার জোর করে এক যুবককে নিজেদের দলের সদস্য করার অভিযোগ উঠল বিজেপির বিরুদ্ধে।
বারাসত ছোট জাগুলিয়ার দেবব্রত চট্টোপাধ্যায় নামের এক যুবক জানিয়েছেন, তিনি সদস্যপদ নিতে না চাইলেও জোর করে তাঁকে দিয়ে তা নেওয়ানো হয়। বিজেপির সদস্যপদ গ্রহণের জন্য তাঁকে চাকরির লোভও দেখানো হয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি নিজের সদস্যপদ বাতিল করেছেন। কেন সদস্যপদ বাতিল করলেন দেবব্রত? তিনি জানান, সদস্য হওয়ার পরেই তাঁর মনে প্রশ্ন জাগে, সরকারি চাকরি পেতে গেলে কোনও রাজনৈতিক দলের সদস্য কেন হতে হবে? তাতেই মত বদলান তিনি।
তাঁর সঙ্গে যে এমন ঘটেছিল, স্থানীয় তৃণমূল নেতাদেরও জানান দেবব্রত। তাদের মাধ্যমে বিষয়টি পৌঁছয় তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের কাছে। বিজেপির সদস্য অভিযান নিয়ে তৃণমূল প্রথম থেকেই ভয় এবং প্রলোভন দেখানোর অভিযোগ তুলছিল। তাদের সেই অভিযোগ যে মোটেই ভ্রান্ত নয়, দেবব্রতের এই ঘটনাই তার প্রমাণ। দেবব্রতর অভিযোগ, এলাকার বাসিন্দা, বিজেপি নেতা শম্ভু বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে বলেন, বিজেপির সদস্য হলে তিনি সরকারি চাকরি বা অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পাবেন।
তাঁর কথায়, ‘একটা স্থায়ী কাজের চেষ্টা দীর্ঘদিন ধরেই করছি। ভাবলাম, যদি চাকরি পাই, তা হলে জীবনটা অন্য রকম হবে। সেই জন্য সই করে দিই। পরে আমার মনে হল, চাকরির জন্য দেশের নাগরিকত্বই তো যথেষ্ট। তার জন্য কোনও রাজনৈতিক দলের সদস্য কেন হতে হবে? তা ছাড়া আমরা সাধারণ মানুষ। রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নই। যখন যাকে ভাল মনে হয়, ভোট দিই।’ এই ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসতেই বেজায় অস্বস্তিতে পড়েছে গেরুয়া শিবির।