সকালে কুমোরটুলি পার্কে লাল-হলুদ জনতার উপস্থিতি ছিল নজর কাড়া। থাকার তো কথাই, কারণ ভারতের ঐতিহ্যশালী লাল-হলুদ শতবর্ষ বলে কথা। সেই উন্মাদনা যে শহরের শিরায় শিরায় গেঁথে যাবে সেটা আর আলাদা করে বলার অবকাশ রাখে না। বাইচুং, সুভাষ ভৌমিক, মনোরঞ্জনদের মতো উজ্জ্বল তারকা উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানে। সেই তারকাখচিত মিছিল কুমোরটুলি থেকে শুরু করে শেষ হয় ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে। সেখানেই বাইচুং, মনারা মশাল তুলে দেন ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কল্যাণ মজুমদারের হাতে। উন্মাদনা আজ শিখরে।
১৯২০ সালে যাত্রা শুরু এই ক্লাবের। ১ আগস্ট থেকে শুরু হয়েছে। তবে এই ক্লাবের প্রথম পদক্ষেপটা নেওয়া হয়েছিল আজকের দিনে। ‘বাঙাল’ বলে সেইসময় খেলতে না দেওয়া তিন খেলোয়াড়কে ঘিরে তৈরি এই ক্লাবের পত্তনের ইট। বাকিটা ইতিহাস কথা বলে। তাবড় তাবড় ফুটবলারদের পায়ের জাদুতে বল নেচেছে, আর লাল-হলুদ জার্সি গায়ে সাফল্য এসেছে এই ১০০ বছরে। মুগ্ধ হয়েছে গোটা ফুটবল জগত।
‘রোদ-বৃষ্টি আসুক ঝড়, ইস্টবেঙ্গল দুর্নিবার’।… রবিবাসরীয় উত্তর কলকাতার কুমারটুলির সকালটা এই স্লোগানেই মেতে ওঠে। বাকিটা সবার জানা। শহরবাসী তো বটেই, ভারত থেকে বিদেশের মাটি উত্তাল হয়ে উঠেছে এই উদযাপনের মাতোয়ারাতে। কুমোরটুলি চত্বরে যেন বোধন হল। আর ঢাকের তালে কাঠি পড়ল আজই। উঠল জয়ধ্বনির রোল। মাতল কলকাতা। মাতল কিছু সাহসী, মাঠ কামড়ে থাকা মানুষের স্মৃতি। সকাল থেকে বৃষ্টির খেলা যেন আকাশের নীল-সাদা রঙের সঙ্গে ইস্টবেঙ্গলের লাল-হলুদ রঙকে মিলিয়ে দিয়েছিল।
তারকাখচিত এই অনুষ্ঠান প্রদীপ প্রজ্জোলন করে ও মশাল জ্বালিয়ে শতবর্ষ উদযাপনের সূচনা করা হয়। তারপর অগণিত সমর্থকেরা দীর্ঘাকার পতাকা নিয়ে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা শুরু করেন। শহরময় ঘুরেছে মন মাতানো লাল-হলুদের রঙের ছটা। বাস-বাইক মিলিয়ে সেজেছে শহর। আর শহরবাসী সাক্ষী থাকল এক বর্ণময় সূচনার।