মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছেন সরকারি দফতরের কাজ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই শেষ করতে হবে। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে তা হয়নি। এবার এই প্রসঙ্গে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করতে চলেছে পূর্ত দফতর। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে চলতি প্রকল্পের কাজ শেষ করতে হবে বলে কড়া নির্দেশিকা জারি করেছে রাজ্যের পূর্ত দফতর। তা না হলে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ারও ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, কাজের ওপর নজরদারির জন্য একটি বিশেষ কমিটিও তৈরি করা হয়েছে।
২০১১ রাজ্যে সরকার পরিবর্তনের পরেই বাম আমলের সরকারি দফতরের গয়ং গচ্ছ কর্ম সংস্কৃতিতে বদল আনার ডাক দিয়ে প্রশাসনিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য সরকারের প্রত্যেক প্রকল্প রূপায়ণের সময়সীমা নির্ধারিত করে দেওয়াই ছিল লক্ষ্য। পরবর্তীকালে সরকারি প্রকল্পে নজরদারির জন্য বিশেষ সফটওয়্যার চালু করেছে নবান্ন। শুধু তাই নয়, জেলায় প্রশাসনিক বৈঠক করার পাশাপাশি নিয়মিত মন্ত্রী-আমলাদের নিয়ে কেন্দ্রীয়ভাবে পর্যালোচনা বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় খোদ এই সব প্রকল্পের অগ্রগতি খতিয়ে দেখেন। তিনি দশ বছরের কাজ এক বছরে করে ফেলেন বলে বারবার গর্বিত ভাবে বলতে শোনা গেছে মমতাকে। তাই মমতার এই সুনামে যাতে এতটুকুও দাগ না লাগে তাই এই পদক্ষেপ পূর্ত দফতরের।
পূর্ত দফতরের কাজের অগ্রগতি নিয়ে সম্প্রতি পূর্ত সচিব অর্ণব রায় দুটি আলাদা আলাদা নির্দেশিকা জারি করেছেন। এর মধ্যে একটিতে পূর্ত দফতরের অধীনে চলা বিভিন্ন প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পূর্ত সচিব। ঐ নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, ‘কয়েকটি প্রকল্পের কাজ সময়ে শেষ করা যায়নি। সেই সব প্রকল্পের কাজ সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে অবশ্যই শেষ করতে হবে। বকেয়া কাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ না করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
একইসঙ্গে এইসব কাজ যাতে নির্ধারিত সময়ে শেষ হয় তা দেখতে পাঁচ সদস্যের একটি বিশেষ নজরদারি কমিটি গঠন করার কথা জানিয়েছেন পূর্ত সচিব। পূর্ত দফতরের মনিটরিং বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট চিফ ইঞ্জিনিয়ার অঞ্জন কুমার সাহার নেতৃত্বে ওই কমিটিতে পূর্ত দফতরের যুগ্মসচিব অমিত কুমার বিশ্বাস ছাড়াও আরও তিনজন পদস্থ আধিকারিক রয়েছেন। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, এই কমিটির সদস্যরা প্রকল্পগুলির অগ্রগতি খতিয়ে দেখে কী ভাবে কাজে আরও গতি আনা যায় সে সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের পরামর্শ দেবেন। কাজে কোনও ত্রুটি বিচ্যুতি ধরা পড়লে তারা সংশ্লিষ্ট আধিকারিকের জবাবদিহিও চাইতে পারেন। ১৫ দিন অন্তর তারা ডাক্তারের কাছে রিপোর্ট জমা দেবেন।