একেই বলে ধর্মের কল বাতাসে নড়ে। কোন্নগরের নিগৃহীত অধ্যাপক নিজেই নাকি শিক্ষক পেটানোয় অভিযুক্ত! সামনে এল এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ। জানা গেছে, ‘নিগৃহীত’ অধ্যাপক সুব্রত চট্টোপাধ্যায় নাকি ১৯৯৭ সালের ২৬ জানুয়ারি নিজেই এক প্রাথমিক স্কুল শিক্ষককে রাস্তায় ফেলে জুতো পেটা করেছিলেন। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করে সুব্রতবাবু বলেছেন, ‘তৃণমূল নতুন করে গল্প সাজাতে চাইছে’।
কোন্নগর কলেজের আক্রান্ত অধ্যাপক সুব্রত চট্টোপাধ্যায় যখন রাজ্যে শিক্ষামহলে চর্চার কেন্দ্রে, তখনই সামনে এল ২২ বছর আগের এই ঘটনা। ১৯৯৭ সালে প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন জাতীয় পতাকা তোলা নিয়ে বচসা শুরু হয়। সুব্রত চট্টোপাধ্যায় তখন ছিলেন নারায়ণপুর পাঠাগারের সম্পাদক এবং দাপুটে সিপিএম নেতা। থানীয়দের অভিযোগ, সিপিএমের লোকজনকে জুটিয়ে সুব্রতবাবুরা বলেন, জাতীয় পতাকা তুলতে দেওয়া যাবে না। বচসা গড়ায় হাতাহাতিতে। সেই সময়েই ছেলের মোটর সাইকেলে চেপে নালিকুল থেকে ফিরছিলেন মাস্টারমশাই মনসারাম ঘোষ। অভিযোগ, যেহেতু রামনগর নুটবিহারী পালচৌধুরী স্কুলের প্রাথমিক শিক্ষক মনসাবাবু কংগ্রেস করতেন, তাঁকে বেধড়ক মারতে শুরু করেন সুব্রতবাবু এবং তাঁর লোকজন। মাটিতে ফেলে করা হয় জুতোপেটা।
‘আক্রান্ত’ শিক্ষক মনসারাম ঘোষের দাবিকে সমর্থন করেছেন বাহিরখণ্ডের বাসিন্দারাও। তাঁরা বলছেন, সুব্রত চট্টোপাধ্যায়ের কথা স্পষ্ট মনে আছে তাঁদের। শিক্ষককে মারধর করার অপরাধে অধ্যাপক সুব্রত চট্টোপাধ্যায় নিজেও অপরাধী। প্রাপ্য শাস্তি-ই পেয়েছেন তিনি। একই কথা বলছেন সেদিনের ‘আক্রান্ত’ শিক্ষক মনসারাম ঘোষও । সংবাদমাধ্যমে দেখেছেন কোন্নগরের ঘটনা। সত্তরোর্ধ অশক্ত শরীরের মনসাবাবু বলেন, ‘কলেজ শিক্ষককে মারা যেমন অন্যায়, প্রাথমিক শিক্ষককে মারাও অন্যায়। এটা ও বুঝুক’।
অবশ্য সুব্রতবাবু সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে বলছেন, ‘ঘটনাস্থলে আমি ছিলামই না। আমার দাদা বাণীব্রত চট্টোপাধ্যায়কে ওরা প্রথমে মারধর করে। তারপর একটু ধস্তাধস্তি হয়’। ২০১২ সাল পর্যন্ত এই নিয়ে মামলাও চলেছে চন্দননগর আদালতে। প্রহৃত শিক্ষক মনসাবাবু বলেন, ‘সুব্রতর পরিবারের অনুরোধেই ওই কেস তুলে নিয়েছি।‘ নারায়ণপুরের বাসিন্দারা বলছেন, ‘কেস তুলে নিলে কি হবে, হাতেনাতে ফল ফলেছে। এতদিনে ধর্মের কল এতদিনে কর্মফলে নড়ল’।