এতদিন নিদান দেওয়া হত পাকিস্তানে চলে যাওয়ার, এবার চাঁদে চলে যাওয়ার নিদান দিল বিজেপি নেতা। পরশুদিন ভারতের ৪৯ জন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব সংখ্যালঘু, দলিতদের গণপিটুনি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিয়েছিলেন। তাঁদের দাবি ছিল, যেভাবে জোর করে সংখ্যালঘুদের ‘জয় শ্রীরাম’ বলানোর চেষ্টা করা হচ্ছে এবং সেটা না বললেই তাঁদের গণপিটুনি দিয়ে মারা হচ্ছে, সেটি অমানবিক। এই বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ নিন প্রধানমন্ত্রী। এই ৪৯ জনের মধ্যে ছিলেন বিশ্ববরেণ্য চিত্র পরিচালক আদুর গোপালকৃষ্ণনও। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই গোপালকৃষ্ণনকে চাঁদে চলে যেতে বলেন কেরলের বিজেপি নেতা বি গোপালকৃষ্ণন।
এদিন কেরলের বিজেপি মুখপাত্র বি গোপালকৃষ্ণন একটি ফেসবুক পোস্টে জানান, “আদুরের যদি ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি পছন্দ না হয়, তিনি শ্রীহরিকোটা গিয়ে চাঁদে যাওয়ার জন্য নাম লেখাতে পারেন।” বিজেপির এই মুখপাত্র এদিন আরও জানান যে, এটা ‘রামায়ণ’ মাস। এখন ভারত এবং তার পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে এই ধ্বনি শোনা যাবেই। তাছাড়া, ভারতে জনগণ ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনির পক্ষে ভোট দিয়েছেন। এটা তাঁদের গণতান্ত্রিক অধিকার। দরকার হলে আদুরের বাড়ির সামনে গিয়েও এই ধ্বনি দেওয়া হবে। আজ মহাত্মা গান্ধী বেঁচে থাকলে, তিনি অবশ্যই আদুরের বাড়ির সামনে অনশনে বসতেন।
নেতার আরও বক্তব্য, “পশ্চিমবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন ‘জয় শ্রীরাম’ বলার জন্য মানুষকে জেলে পাঠিয়েছেন, তখন তো আদুর কোনও প্রতিবাদ করেননি? গোপালকৃষ্ণন প্রখ্যাত চিত্র পরিচালক হতে পারেন, কিন্তু ভারতের সংস্কৃতির নিন্দা করার কোনও অধিকার তাঁর নেই এবং বর্তমান সরকারের থেকে কোনও সুবিধা পাচ্ছেন না বলেই নাকি আদুর এই সমস্ত কথা বলছেন।”
আদুর নিজে অবশ্য জানিয়েছেন, ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনিতে তাঁর কোনও আপত্তি নেই। তাঁর বাড়ির সামনে এসে কেউ যদি এই ধ্বনি দেয়, তিনি নিজে গলা মেলাবেন। কিন্তু এই ধ্বনির অজুহাতে মানুষকে হত্যা করা এবং হত্যার পর এই ধ্বনির ব্যবহার তাঁর পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। এই মন্তব্যে স্বাভাবিক ভাবেই সৃষ্টি হয়েছে বিতর্ক। এই বিতর্কে আদুরের পাশে দাঁড়িয়েছেন বহু বিখ্যাত চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব এবং রাজনৈতিক নেতারাও। কেরলের প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির অধ্যক্ষ মুলাপল্লি রামচন্দ্রন গোপালকৃষ্ণনের এই ফেসবুক পোস্টের নিন্দা করে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, ,এই মন্তব্য কেরলের মর্যাদার ওপর কালো দাগ। এতে রাজ্যেরই সম্মানহানি হল।”