বিজেপির তথাকথিত ষড়যন্ত্রের ফাঁসে পড়ে গদি হারাতে হল কর্ণাটকের বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রীকে। আস্থা ভোটে ৯৯-১০৫ ব্যবধানে পরাস্ত হল কংগ্রেস-জেডিএস জোট, শিবকুমার-কুমারস্বামীর সব চেষ্টা জলে গেল। সব ঠিক থাকলে মাত্র ১৪ মাসের ব্যবধানে দ্বিতীয়বার কন্নড়ভূমের মসনদে বসবেন বিজেপির বিএস ইয়েদুরাপ্পা। বুধবারই তিনি সরকার গড়ার দাবি জানাবেন রাজ্যপালের কাছে। বিজেপি সূত্রে অন্তত এমনটাই খবর। কিন্তু, তিনিও কি সফলভাবে সরকার চালাতে পারবেন? স্থায়ী সরকার দেওয়ার উপযুক্ত সংখ্যা কি ইয়েদ্দির কাছে আছে, বিধান সৌধের আশেপাশে কিন্তু এমন প্রশ্নও ঘোরাফেরা করছে।
কর্ণাটক বিধানসভার মোট আসন ১২৫। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য বিজেপির প্রয়োজন ১১৩ জন বিধায়ক। আস্থাভোটে ১০৫ জন বিধায়কের সমর্থন পেয়েছে বিজেপি। অর্থাৎ, সেক্ষেত্রে আরও অন্তত ৮ জন বিধায়কের সমর্থন প্রয়োজন গেরুয়া শিবিরের। এবার আসা যাক কংগ্রেস-জেডিএসের পদত্যাগী বিধায়কদের প্রসঙ্গে। যে ১৬ জন বিধায়ক ইতিমধ্যেই পদত্যাগ করেছেন, তাদের পদত্যাগপত্র যদি গৃহীত হয় তাহলে কর্ণাটক বিধানসভায় মোট আসন নেমে আসবে ২০৯টিতে। সেক্ষেত্রে, ম্যাজিক ফিগারও নেমে দাঁড়ায় ১০৫-এ। যা বিজেপির হাতে রয়েছে। তাই বিজেপির এখন আশা, এই ১৬ জন বিধায়কের পদত্যাগপত্র গৃহীত হবে। যদিও, তাদের পদত্যাগ মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। যদি, বিধায়কদের ইস্তফাপত্র গৃহীত হয়, তাহলে বিজেপি এখনই ম্যাজিক ফিগার নিয়ে সরকার গড়তে পারবে। কিন্তু, সমস্যা হল ইস্তফাপত্র গৃহীত হলে এই ১৬টি আসনে ৬ মাসের মধ্যে আবারও ভোট করাতে হবে। সেক্ষেত্রে, ১৬টি আসনের মধ্যে অন্তত ৮টি আসন জিততে হবে বিজেপিকে। প্রশ্ন হল, কর্ণাটকে বিজেপির হাওয়া যতই ভাল হোক যে ১৬ জন বিধায়ক পদত্যাগ করেছেন, সেই আসনগুলির মধ্যে আটটিতে জিতে আসাটা সত্যিই কঠিন কাজ।
আবার যদি, সর্বোচ্চ আদালতে এই পদত্যাগপত্রগুলি গৃহীত না হয়, সেক্ষেত্রে এই ১৬ জন বিধায়ক বিজেপিকে সমর্থন করতে পারেন। কিন্তু, তাতেও রয়েছে সমস্যা। সেক্ষেত্রেও কংগ্রেস এবং জেডিএস স্পিকারের কাছে আবেদন করে এই বিধায়কদের পদ বাতিল করার চেষ্টা করবে। বিধায়ক পদ বাতিল হলে আবারও সেই ৬ মাসের মধ্যে ভোট করানোর প্রশ্ন। সেক্ষেত্রেও বিজেপিকে এই ১৬টি আসনের মধ্যে আটটিতে জিততে হবে বিজেপিকে।
অর্থাৎ, এই মুহূর্তে যা পরিস্থিতি তাতে কংগ্রেস-জেডিএসের পতন ঘটিয়ে ইয়েদুরাপ্পা নতুন সরকার গড়লেও ৬ মাসের মধ্যে অ্যাসিড টেস্ট দিতে হবে বিজেপিকে।