বাংলাদেশী শরণার্থীদের হটাতে নাগরিকপঞ্জী (এনআরসি) করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। ইতিমধ্যে বাংলাদেশের পার্শ্ববর্তী অসম রাজ্যে এনআরসি তৈরির কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে। তবে আদতে কত বাংলাদেশি ভারতে এসেছে, সে ব্যাপারে কোনও স্পষ্ট তথ্যই নেই ভারত সরকারের কাছে। ২০১৭ সালে তত্কালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সংসদে দেওয়া বিবৃতি থেকে এটাই স্পষ্ট।
সংসদ সূত্রে খবর, কেবল দু’বার ভারতের অবৈধ বাংলাদেশী শরণার্থীর তথ্য সংসদে পেশ করা হয়েছিল। প্রথমবার পেশ হয়েছিল ২০০৪ সালে। তত্কালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শ্রীপ্রকাশ জয়সোয়াল সংসদে জানিয়েছিলেন, ২০০৪ সাল পর্যন্ত ভারতে মোট ১.২ কোটি অবৈধ বাংলাদেশী রয়েছে। পরে অবশ্য বিবৃতি দিয়ে তিনি আবার জানান, জনশ্রুতি এবং রাজনৈতিক দলের বিচারের ভিত্তিতেই ভারতের অবৈধ বাংলাদেশী শরণার্থীর সংখ্যাটি পেশ করেছেন।
শ্রীপ্রকাশ জয়সোয়ালের তথ্য পেশের ১২ বছর পর আবার ২০১৬ সালে দ্বিতীয়বার বাংলাদেশী শরণার্থীর তথ্য সংসদে পেশ হয়। সেবার তত্কালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেণ রিজিজু সংসদে জানিয়েছিলেন, ভারতে মোট অবৈধ শরণার্থীর সংখ্যা প্রায় ২ কোটি। অর্থাত্ শ্রীপ্রকাশ জয়সোয়ালের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ১২ বছরে প্রায় ৭০ শতাংশ অবৈধ বাংলাদেশী শরণার্থী বৃদ্ধি পেয়েছে। শুধু তাই নয়, গত চারবছরে কমপক্ষে ৭ বার অবৈধভাবে বাংলাদেশী শরণার্থীর এদেশে প্রবেশ ঘটেছে বলেও তিনি জানান। যদিও কিরেণ রিজিজু কোথা থেকে এই তথ্য পেয়েছেন, তা স্পষ্ট করেননি। তারপর কেন্দ্রীয় সরকারও এই বিষয়ে কোনও প্রমাণ দিতে পারেনি। অবশেষে অবৈধ বাংলাদেশীর প্রকৃত সংখ্যা জানা সম্ভব নয় বলেও স্বীকার করে নেয় কেন্দ্র। ২০১৭ সালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং সংসদে বলেন, ‘ঠিক কবে থেকে বাংলাদেশীরা এদেশে ঢুকছে এবং তাদের বিস্তারিত তথ্য নেই। দেশে বাংলাদেশী শরণার্থীর প্রকৃত তথ্য দেওয়া সম্ভব নয়।’