নিজের জীবন শেষ করে দেবেন, এমন সিদ্ধান্তই নিয়ে ফেলেছিলেন পিকনিক গার্ডেনের এক যুবক। সে কথা একটি ভিডিয়ো বার্তা-সহ ফেসবুকে পোস্ট করেছিলেন নিজেই। আর সেই ‘পোস্ট’ই বাঁচিয়ে দিল যুবককে। সৌজন্যে ফেসবুক এবং কলকাতা পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার রাতে ওই যুবক ফেসবুকে একটি ভিডিয়ো আপলোড করেন। সেই ভিডিয়োয় তাঁকে বলতে শোনা যায়, “আত্মহত্যা করতে যাচ্ছি”। তাদের প্ল্যাটফর্মে পোস্ট হওয়া এই সংক্রান্ত বিষয়ের উপরেই নজর রাখে ফেসবুক। এই ধরনের একটি পোস্ট দেখে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ সঙ্গে সঙ্গেই কলকাতা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে।
ইমেল করে তারা লালবাজারকে জানায়, কলকাতার এক ফেসবুক ব্যবহারকারী নিজের ওয়ালে আত্মহত্যার বার্তা-সহ একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেছেন। ওই যুবকের ফেসবুক প্রোফাইল-সহ কিছু তথ্য তাঁরা কলকাতা পুলিশকে দেন। এর পরেই তৎপর হয় কলকাতা পুলিশ। সঙ্গে সঙ্গে লালবাজার থেকে যোগাযোগ করা হয় কসবা থানার সঙ্গে। খবর পেয়ে থানার ওসি পৌঁছন ওই যুবকের মোবাইল লোকেশন যেখানে দেখাচ্ছে, সেই জায়গায়। যদিও সেই লোকেশন কোনও বাড়ির ঠিকানা নয়। এর পর ওই যুবকের সঙ্গে পুলিশকর্মীরা কথা বলেন। কথা হয়, তাঁদের সঙ্গে থাকা মনোবিদদের সঙ্গেও। জানা যায়, ওই যুবক বেশ কিছু দিন ধরেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। ব্যক্তিগত বিভিন্ন কারণের পাশাপাশি ওই যুবকের পারিবারিক সমস্যাও রয়েছে।
ফেসবুক লাইভ করে বা ফেসবুকে ভিডিয়ো আপলোড করে আত্মহত্যার ঘটনা এর আগে বেশ কয়েক বার ঘটেছে শহরে। কিন্তু এমন তৎপরতার সঙ্গে দ্রুত পদক্ষেপ করতে দেখা যায়নি কখনও। তা সে পুলিশ হোক বা সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটগুলো। এ বিষয়ে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান মুরলীধর বলেন, “এটা আমাদের কর্তব্য। এক জন মানুষের প্রাণ বাঁচানো গিয়েছে। ওই ব্যক্তির প্রাইভেসির কারণে এর থেকে বেশি আমরা কিছু জানাতে চাইছি না”। সাইবার বিশেষজ্ঞ বিভাস চট্টোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘সারা বিশ্বে প্রায় ২০০ কোটির উপর ফেসবুক ইউজার আছে। সবার ফেসবুক প্রোফাইলের উপর নজরদারি চালানো সম্ভব নয়। ফেসবুকের একটি আর্টিফিসিয়াল ইন্টালিজেন্স (এআই) এবং ডেটা অ্যানালিসিস সিস্টেম আছে। কেউ যদি আত্মহত্যা শব্দটি লেখেন বা ওই সংক্রান্ত কোনও অডিয়ো অথবা ভিডিয়ো আপলোড করেন, তা হলে সেটা সঙ্গে সঙ্গেই ফেসবুক কর্তৃপক্ষের নজরে চলে আসে।’’