কথায় আছে, নিজে থেকে সতর্ক না হলে কেউ আপনাকে পাল্টাতে পারবে না। কলকাতার মেট্রো যাত্রীদের অবস্থাও প্রায় সেইরকম। মেট্রো কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি নিয়ম এনেছিল, জোর করে মেট্রোয় ওঠার চেষ্টা করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে ১০০০ টাকা জরিমানা করা হবে। কিন্তু তারপরেও হুঁশ ফেরেনি যাত্রীদের। এদিন সকলেই যেমন ভিড়ের চাপে মেট্রোর দুই পাল্লা জোড়া লাগাতে চালককে চেষ্টা করতে হল চার থেকে পাঁচ বার। ফলে প্রতি স্টেশনেই ট্রেন দাঁড়ল নির্দিষ্ট সময়ের থেকে বেশ কিছুক্ষণ বেশি। ফলে যা হওয়ার তাই হল। সপ্তাহের প্রথম দিনের সকালেই বেশ কিছুক্ষণ দেরিতে চলল মেট্রো। একটি মেট্রো দেরিতে চলার মানেই, বাকি ট্রেনও লেট। যার ফলে ভুগলেন যাত্রীরা। মেট্রো কর্তৃপক্ষের দাবি, ভিড়ের চাপ দিন দিন বাড়ছে। সে কারণেই দরজা বন্ধ হতে সমস্যা হচ্ছে। যার ফলেহচ্ছে দেরিও।
দরজা বন্ধ হওয়ার মুহূর্তে মেট্রোয় ওঠা আটকাতে শর্তসাপেক্ষে হাজার টাকা জরিমানা ধার্য করেছিল মেট্রো কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তা সত্বেও পরিস্থিতি বদলাচ্ছে না। ব্যস্ত সময়ে কোনওমতে দেহটাকে রেকের মধ্যে গলিয়ে দিতে চাইছেন সবাই। কিন্তু কারও আটকাচ্ছে ব্যাগ। কারও ছাতা। কারও বা পা। ফলে দরজা বন্ধ হচ্ছে না। আর এই বিষয় নজরদারির জন্য দেখা মিলছে না আরপিএফেরও। সোমবার সকালেও সেই ছবিই দেখা গেল অধিকাংশ স্টেশনে। কবি সুভাষগামী এসি রেকে শ্যামবাজার, শোভাবাজার স্টেশনে সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ ভিড়ের চাপে ট্রেনে উঠতেই পারলেন না অনেকে। কেউ কেউ চেষ্টা করে উঠতে পারলেও, ভিড় সহ্য করতে না পেরে নেমে যান। কিন্তু এই ওঠা-নামা করতে গিয়েই কিছু সময়ের জন্য আটকে পড়ে সকালের গোটা কয়েক ট্রেন।
রোজকার যাত্রীদের দাবি, ট্রেনের ট্রিপ না বাড়ালে এই পরিস্থিতি হবেই। সকালে প্রত্যেকেরই অফিস যাওয়ার তাড়া থাকে। প্রত্যেকেই চান যে কোনও উপায়ে ট্রেনের ভিতরে ঢুকতে। কিন্তু অনেক সময়ই ট্রেনে এতটাই ভিড় থাকে যে ওঠা সম্ভব হয় না। তাই জোর করে উঠতে চান যাত্রীরা। তাঁদের বক্তব্য, একটা ট্রেন ছাড়ার পরও পরের ট্রেন যে ফাঁকা পাব, তেমনটা নয়। তাই কোন ভরসায় দাঁড়িয়ে থাকব! কিন্তু রেকের সংখ্যা না বাড়ালে যে তা সম্ভব নয়, তা বিলক্ষণ জানে কর্তৃপক্ষও। জরিমানার কথা বলে মানুষের মধ্যে ঝুঁকি নেওয়ার অভ্যাসে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু আসল সমস্যা তো দেখা দিয়েছে ট্রিপের। যে সংখ্যক যাত্রী ট্রেনে উঠছেন, তাতে মনে করা হচ্ছে মেট্রোগুলির ট্রিপ বাড়ানোটাই এই সমস্যা থেকে বেরোনোর একমাত্র রাস্তা।