এই রাজ্যে সরকার একদিকে প্রাথমিক শিক্ষকদের আন্দোলনের সুরাহা বার করার চেষ্টা চালাচ্ছেন, বিভিন্ন পন্থার খোঁজ চালাচ্ছেন। অন্যদিকে, বঙ্গ বিজেপি নেতা-নেত্রী এই ইস্যুকে হাতিয়ার করে অরাজকতার সৃষ্টি করছে। কিন্তু এই একই ইস্যুই দেখা দিল বিজেপি শাসিত মণিপুরে। মণিপুরে শিক্ষকদের বেতন বেনজিরভাবে কমিয়ে দেওয়া হল। স্রেফ কমানো হল বলা ভুল হবে। এবার থেকে প্রায় ১০ বছরের পুরনো পে-স্কেল অনুযায়ী বেতন পাবেন মণিপুরের শিক্ষকরা।
প্রাথমিক স্তর থেকে কলেজ পর্যন্ত সব স্তরের শিক্ষকদের বেতনই কমানো হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই হঠাৎ বেতনহ্রাসের ঘটনায় আকাশ ভেঙে পড়েছে শিক্ষকদের মাথায়। রাজ্যজুড়ে আন্দোলনের পথ বেছে নিয়েছেন তাঁরা। শনিবার থেকে তিনদিনের জন্য ক্যাজুয়াল লিভ নিয়েছেন রাজ্যের অধিকাংশ শিক্ষক।
প্রসঙ্গত, গত ১১ জুলাই মণিপুর বিধানসভায় একটি বিল পাশ হয়। যে বিল অনুযায়ী শিক্ষকদের বেতন বেশ খানিকটা কমে যায়। আগে মণিপুরের উচ্চমাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষকদের গ্রেড পে ৪ হাজার ৮০০ টাকা থেকে কমিয়ে করা হয় ৪ হাজার ৪০০ টাকা। মোট বেতন দাঁড়ায় ৯ হাজার ৩০০ টাকা থেকে ৩৪ হাজার ৮০০ টাকা। প্রাথমিক শিক্ষকদের গ্রেড পে ৩ হাজার থেকে কমিয়ে ২ হাজার ৪০০ করা হয়েছে। ফলে তাদের নতুন বেতনক্রম দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ২০০ টাকা থেকে ২০ হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত। একইভাবে বেতন কমানো হয়েছে কলেজের অধ্যাপকদেরও। আসলে মণিপুর সরকার মনে করছে, রাজ্যের বর্তমান আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতিতে উপযুক্ত বেতনই দেওয়া হবে শিক্ষকদের। যদিও, নতুন যে গ্রেড-পের স্তর নির্ধারণ করা হয়েছে, তা ২০০৯ সালে চালু ছিল।
আর এই সিদ্ধান্তের পরই উত্তাল হয়ে উঠেছে মণিপুর। শনিবার থেকে ক্যাজুয়াল লিভ নিয়ে তিনদিনের ধর্মঘট পালন করছেন শিক্ষকরা। সোমবারও রাজ্যের অধিকাংশ শিক্ষক ক্যাজুয়াল লিভ নিয়েছেন। সংখ্যাটা ১০ হাজারেরও বেশি। শিক্ষকদের সংগঠনের তরফে এক বিক্ষোভকারী জানাচ্ছেন, “সরকার যেখানে শিক্ষাব্যবস্থার উন্নতির জন্য একাধিক পদক্ষেপ করছে, সেখানে শিক্ষকদের বেতন কমিয়ে আসলে তাঁদের অপমান করা হচ্ছে। এটা আমাদের জন্য অসম্মানের। এভাবে শিক্ষকদের গ্রেড পে কমিয়ে দুর্দশার দিকে ঠেলে দেওয়ার কোনও মানে হয় না।” কিন্তু এত কিছুর পরও এই রায় নিয়ে মুখে কুলুব এঁটেছেন মণিপুর সরকার।