প্রথম মোদী সরকারের আমলে বারবারই কেন্দ্রীয় বঞ্চনার শিকার হয়েছে এ রাজ্য। সেই ধারা বজায় রয়েছে তাদের দ্বিতীয় ইনিংসেও। সদ্য ঘোষিত কেন্দ্রীয় বাজেটে বাংলা সেই ‘ছাগলের তৃতীয় সন্তান’ হয়েই রয়ে গেছে। বাজেটে বাংলার জন্য কোনও বিশেষ প্রকল্পের ঘোষণা তো হয়ইনি, বরং রাজ্যের বেশ কিছু চলতি প্রকল্পে বরাদ্দ শুন্য করে দেওয়া হয়েছে। এমনকী সাধারণ বাজেটের মতো রেল বাজেটেও বাংলায় ‘বঞ্চনা এক্সপ্রেস’ ছুটিয়েছে মোদী সরকার। এ নিয়েই বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে দিল্লীতে সরব তৃণমূল। এখন থেকে প্রায় প্রতিদিনই কেন্দ্রের বিভিন্ন মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে বাংলার প্রকল্পগুলি নিয়ে মোদী সরকারের মনোভাব জেনে নেবে বলেই ঠিক করেছে তৃণমূল।
সেই মতো রাজ্যের নাম পরিবর্তন থেকে শুরু করে রেল, বিদ্যুৎ, জল, কয়লার মতো বাংলার বিভিন্ন প্রকল্পের গতিবিধি নিয়ে মোদী সরকারকে চেপে ধরা শুরু করেছেন দলের সাংসদরা। এবার যেমন রাজ্যের স্বার্থে একগুচ্ছ দাবি নিয়ে কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করলেন তৃণমূল সাংসদরা। তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েনের নেতৃত্বে তৃণমূল সাংসদরা পীযূষ গোয়েলের সঙ্গে বৈঠক করেন। সাংসদরা জানিয়েছেন, গত ২ মাসে প্রয়োজনের তুলনায় কয়লা পরিবহণে রেকের ঘাটতি দেখা গেছে। যেখানে প্রয়োজন ৫১০টি রেকের, সেখানে মাত্র ৩২৩টি রেকে কাজ চলছে। বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রীকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
গতকালের বৈঠকে রাজ্য তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিতে মসৃণভাবে কয়লা পরিবহণের জন্য রেলমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে তৃণমূল। দলীয় সাংসদদের তরফে রাজ্যের আজিমগঞ্জে-ফরাক্কা সেকশনের মণিগ্রাম স্টেশন থেকে সাগরদিঘি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র পর্যন্ত রেল লাইনের বৈদ্যুতিককরণের দাবি জানানো হয়। মন্ত্রীকে দেওয়া চিঠিতে সাগরদীঘি, বক্রেশ্বর ও কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিওবিআরএন রেকের সংখ্যা বৃদ্ধির আর্জিও জানানো হয়েছে। এছাড়াও এসপিভি প্রকল্পে পাকুড়-পাচওয়াড়া এবং নলহাটি বাইপাস লাইনের কাজ দ্রুত শেষ করার দাবি জানিয়েছে তৃণমূল। পাশাপাশি, রেলমন্ত্রী থাকাকালীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষিত প্রকল্পগুলির ভবিষ্যৎ নিয়েও রেলমন্ত্রীর কাছে জানতে চায় ঘাসফুল শিবির।