লাগাতার টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত আসাম৷ ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি চারদিকে৷ অবিরত এই ভারী বর্ষণের জেরে ডুবে গেল আসমের কাজিরাঙা জঙ্গল৷ বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও৷ এপর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে সাতজনের।সব মিলিয়ে বিপর্যস্ত গোটা আসাম৷
লাগাতার ভারী বৃষ্টিতে বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে ব্রহ্মপুত্র, ধানসিরি, জিয়া ভারালি, দিখো, পুঠিমারি এব বেকি নদী৷ রাজ্যের প্রায় সব কটি নদনদীর জলই বিপদসীমার প্রায় ১৬ সেন্টিমিটার উপরে। ক্ষতিগ্রস্ত কমপক্ষে ১৫ লক্ষ মানু্ষ। ৬৮টি ত্রাণশিবিরে রয়েছেন ২০০০০–এরও বেশি মানুষ। সব থেকে খারাপ অবস্থা বরাপেটা জেলার। লখিমপুর জেলার রঙ্গানদী জলবিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে জল ছাড়ায় লখিমপুর এবং লাগোয়া জেলার মানুষদের দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। ব্রহ্মপুত্রের জল এতটাই বেড়ে গিয়েছে যে গুয়াহাটির কালীপুরে চক্রেশ্বর মন্দিরের একটি স্তম্ভের উপর অবস্থিত বিষ্ণু–লক্ষ্মীর মূর্তিও প্রায় অর্ধেক ডুবে গিয়েছে৷ মোরিগাঁও জেলায় ব্রহ্মপুত্রের জল ঢুকে টেঙ্গাগুরিতে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় নদের মধ্যে ভেঙে পড়ে।
ন্যাশনাল হেরিটেজ, কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যানের ৭০ শতাংশ বনভূমি এবং উদ্যানের ভিতরের ৯৫টি শিবির জলের তলায়। বন দপ্তরের সব কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। একশৃঙ্গী গন্ডার, হাতি, বাঘ সহ কাজিরাঙার পশুদের উঁচু স্থানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। অসমের সুতারাকান্দি থেকে মণিপুরের ভালি পর্যন্ত বিস্তৃত ৩৭ নম্বর জাতীয় সড়কে চোরাশিকারিদের রুখতে কড়া নজরদারি চালাচ্ছেন বনকর্মীরা। পশুরা যাতে নিরাপদে জাতীয় সড়ক পারাপার করতে পারে সেজন্য সড়কের চলছে গাড়ি নিয়ে টহলদারি এবং রাত পাহারা।
অাসামের বিখ্যাত চা বাগান-সহ ২৭০০০ হেক্টরের উপর জমির ফসল জলের তলায়। মৌসম ভবন আগামী ৪৮ ঘণ্টা আরও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে। বন্যায় দুর্গতদের উদ্ধারে প্রশাসনের সঙ্গে হাত লাগিয়েছে এসডিআরএফ। ৩৩টি জেলার মধ্যে ২৫টি বানভাসি।
নেপালেও বৃহস্পতিবার থেকে প্রবল বৃষ্টিতে বন্যার প্রকোপ। পাহাড়ের বহু জায়গায় ধস নেমেছে। রবিবার নেপাল পুলিস জানিয়েছে, এপর্যন্ত ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ ৩৩ জন। জখম আরও ২৫ জন। দুর্গতদের উদ্ধারে মোতায়েন করা হয়েছে ২৭৩৮০ জন পুলিসকর্মী এবং ৮৮৫৬ জন উদ্ধারকারীকে। নিখোঁজদের সন্ধান চলছে। বন্যার জলে রাস্তা ডুবে গিয়ে এবং ধসে রাস্তা আটকে যাওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন উদধারকারীরা। সুদূর পশ্চিম প্রদেশের চুরে অঞ্চলে হরপা বানে ভেসে গিয়েছে প্রায় পুরো এলাকা। আগামী তিনদিন আরও ভারী বৃষ্টি এবং তার ফলে এক, দুই এবং তিন নম্বর প্রদেশ এবং গন্ডকী প্রদেশেও হরপা বান আসার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে নেপালের আবহাওয়া দফতর।