লোকসভা ভোটের আগে ব্রিগেডে বিজেপি বিরোধী সমস্ত দলকে এক ছাতার তলায় এনে সমাবেশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোটের পরে বিজেপির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক লড়াই মমতাকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হতে পারে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। এবার বিজেপি নেতা সুব্রক্ষণ্যম স্বামীর একটি মন্তব্য সেই চর্চাকে আরও উস্কে দিল।
দিন দুয়েক আগে একটি টুইট করে রাজ্যসভার এই বিজেপি সাংসদ বলেছিলেন, ‘গোয়া ও কাশ্মীরের (কর্নাটক বলতে চেয়েছেন কি না, প্রশ্ন আছে কারও কারও) ঘটনা দেখে আমার মনে হয়েছে, একক দল হিসেবে শুধু বিজেপিই থেকে গেলে দেশের গণতন্ত্র দুর্বল হবে। সমাধান? ইতালীয় ও তাঁর বংশধরদের সরতে বলুন! তার পরে সংযুক্ত কংগ্রেসের সভানেত্রী হতে পারেন মমতা। এনসিপি-ও মিশে যেতে পারে’। কলকাতার একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসেও একই কথা বলেন স্বামী।
এরপরেই রাজনৈতিক মহলে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরাও জোর দিয়ে বলছেন, বিজেপির মোকাবিলায় সেই পুরনো সঙ্গীদের সম্মিলিত মঞ্চের নেতৃত্ব দিতে পারেন একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই। ঘটনা হল, লোকসভা নির্বাচনে বিপর্যয়ের দায় নিয়ে রাহুল কংগ্রেস সভাপতির পদ ছেড়েই দিয়েছেন। নতুন নেতা বেছে নিতে হিমশিম খাচ্ছে কংগ্রেস। জাতীয় স্তরে মোদী-শাহদের মোকাবিলায় দিশাহীন দেখাচ্ছে হাত শিবিরকে। এই পরিস্থিতিতে অনেকেই মনে করছেন, দলের নিজস্ব অস্তিত্ব মুছে না ফেলেও কংগ্রেস মনোভাবাপন্ন নানা সংগঠন বিজেপি-বিরোধিতার জন্য এক জায়গায় আসতেই পারে। শরদ পওয়ারের এনসিপি কংগ্রেস মিশে যাবে কি না, তা নিয়ে আলোচনা ইতিমধ্যেই উঠে গিয়েছে। কংগ্রেস ভেঙে বেরোনো এনসিপি-র মতো দল ওই সম্মিলিত মঞ্চে সামিল হতে পারে। সে ক্ষেত্রে মোদী-বিরোধী পরিসরে জাতীয় স্তরের মুখ হিসেবে সামনে আসছে একটাই নাম, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিজ্ঞতা এবং গ্রহণযোগ্যতায় যার বিকল্প কেউ নেই।
তৃণমূলের এক প্রথম সারির নেতার কথায়, ‘বিজেপির বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধে আমাদের নেত্রী সকলকে সঙ্গে নিয়েই লড়াই করছেন। বিধানসভায় তাঁর উদ্যোগেই সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে প্রস্তাব এসেছে, যেখানে কিছু ভিন্ন মত থাকলেও মূল সুরকে সমর্থন করেছে বাম ও কংগ্রেস। লোকসভা ভোটের ফল যেমনই হোক, দেশে বিজেপি-বিরোধী রাজনীতির মুখ এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই’।