কেন কাজ করেনি মেট্রোর ডোর সেন্সর? যাত্রীর হাত আটকে রয়েছে জেনেও কেন ট্রেন থামাননি চালক? প্ল্যাটফর্ম থেকে প্রায় ৬০ মিটার পর্যন্ত ঘষটাতে ঘষটাতে গেছে দেহ! নিরাপত্তারক্ষীরা তখন কী করছিলেন? শনিবারের সন্ধেয় কলকাতা মেট্রোর ইতিহাসে নজিরবিহীন এল দুর্ঘটনার পরে যখন মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষের উদ্দেশ্যে এমনই সব প্রশ্ন তুলছেন ক্ষুব্ধ যাত্রীরা, তখন পার্কস্ট্রিট মেট্রো স্টেশনে ওই যাত্রীর মর্মান্তিক মৃত্যুর জন্য সরাসরি অব্যবস্থার দিকেই আঙুল তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মোদী জমানায় কলকাতা মেট্রো সবথেকে বেশি অবহেলিত বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। যাত্রী নিরাপত্তায় জোর দেওয়ার পক্ষেও সওয়াল করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
প্রসঙ্গত, শনিবার সন্ধ্যা ৬.৪০ মিনিট নাগাদ পার্কস্ট্রিট স্টেশনে কবি সুভাষগামী ট্রেনে ওঠার এক যাত্রীর হাত দরজার মাঝে আটকে যায়। দেহ তখন ট্রেনের বাইরে। সেই অবস্থাতেই ট্রেন চলতে শুরু করে। ট্রেন টানেলে ঢোকার পরে পাশের দেওয়ালে ধাক্কা খেয়ে থার্ড লাইনে পড়ে যান তিনি। ঘটনাস্থলে ওই যাত্রীর মৃত্যু হয়। এই খবর জানার পরে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। ডিসি (দক্ষিণ) মিরাজ খালিদের নেতৃত্বে পুলিশও পৌঁছয় ঘটনাস্থলে। পৌঁছয় দমকল বাহিনী। মেয়র বলেন, ‘কীভাবে এত বড় দুর্ঘটনা ঘটল খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মেট্রোর চালক ও গার্ডকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। উচ্চপর্যায়ের তদন্ত হবে।’ তিনি এ-ও জানান, অভিযোগ দায়েরের মাধ্যমে কলকাতা পুলিশের তদন্তের ফলাফলের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে আশ্বস্ত করেন তিনি।
আর তারপরই মেট্রোর দরজায় হাত আটকে যাত্রী মৃত্যু নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। কলকাতা মেট্রো চূড়ান্ত অব্যবস্থার শিকার বলে অভিযোগ করেন তিনি। মমতা জানান, তিনি রেলমন্ত্রী থাকাকালীন কলকাতা মেট্রো আলাদা জোন হয়েছিল। নিয়মিত রেলের রক্ষণাবেক্ষণ করা হত। নতুন রেক আনা হত। এখন কিছুই করা হয় না। তাঁর কথায়, ‘অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। আগে মেট্রোর জন্য আলাদা জোন তৈরি করেছিলাম। এখন আর রক্ষণাবেক্ষণ হয় না। নতুন একটাও প্রকল্প করেনি ওরা। কলকাতায় মেট্রো রেল সবচেয়ে অবহেলিত।’ গতকাল মৃত সজল কাঞ্জিলালের পরিবারের ১ জনকে চাকরির আশ্বাসও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।