গোয়াতে দলবদল নিয়ে রীতিমতো ক্ষুব্ধ বিজেপি কর্মীরা। এমনকি শীর্ষ নেতৃত্বের ওপরও তোপ দেগেছেন তাঁরা। ঘটনার সূত্রপাত কংগ্রেস ছেড়ে কয়েকজনের বিজেপিতে যোগ দেওয়ার। জানা গেছে, কংগ্রেস ছেড়ে ১০ বিধায়ক যোগ দিয়েছেন বিজেপিতে। এর ফলে ৪০টি আসন বিশিষ্ট বিধানসভায় ১৭ থেকে একলাফে ২৭-এ পৌঁছেছে বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা।
শনিবার সদ্য দলে যোগ দেওয়া বিধায়কদের মধ্যে ৩ জনকে মন্ত্রীও বানিয়েছে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। কিন্তু, এই ঘটনার জেরেই ক্ষোভে ফুঁসছেন গোয়ার বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। নেতাদের বিরুদ্ধে আঙুল তুলে দলবদলের এই ঘটনাকে অনৈতিক বলেও উল্লেখ করছেন। বলছেন, এই ধরনের পদক্ষেপের মাধ্যমে মানুষকে বোকা বানানো হচ্ছে। সুমন্ত যোগলেকর নামে এক আরএসএস কর্মী বলেন, “এই ঘটনায় মানসিকভাবে পুরোপুরি ভেঙে পড়েছি আমি। যেভাবে ওই বিধায়কদের বিজেপিতে নেওয়া হল ও মন্ত্রিসভায় সুযোগ দেওয়া হল তা মেনে নিতে পারছি না। ক্ষুদ্র স্বার্থ চরিতার্থ করতে গিয়ে পুরোপুরি অনৈতিক কাজ করা হল।”
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সুমন্ত যোগলেকরের বাবা গোয়ায় আরএসএস-এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা হওয়ার পাশাপাশি বিজেপি তৈরিতেও সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিলেন। কিন্তু, বর্তমানে গোয়ার বিজেপি নেতাদের কাজকর্মে হতাশ হয়ে পড়েছেন তাঁর ছেলে। তাঁর কথায়, “আমাদের শীর্ষ নেতারা মানুষের সঙ্গে দেখা করেন না। আমাদেরই মানুষের মুখোমুখি হতে হয়। আমরাই তাঁদের সদস্যপদ নিতে ও ভোট দিতে বলি। তাই আমি আমার আদর্শের সঙ্গে কোনওভাবেই সমঝোতা করব না। বরং এই দলবদলের বিরোধিতা করব। আসলে এই ঘটনা আমাকে আঘাত দিয়েছে। নেতাদের কাছে জানতে ইচ্ছা করছে, এটাই কি সেই অন্যধারার দল?”
বর্ষীয়ান সাংবাদিক অরবিন্দ তেংগসে বলেন, “লোকসভা নির্বাচনে আমি বিজেপিকে ভোট দিয়েছি। কিন্তু, কংগ্রেস বিধায়করা যেভাবে বিজেপিতে যোগ দিলেন তাতে হতাশ হয়ে পড়েছি।” বিজেপি কর্মী সমর্থকদের অভিযোগ, তাঁদের নেতারা কোনও সময়ই মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন না। মানুষের অভাব অভিযোগের মুখোমুখি হতে হয় তাঁদেরকেই। অথচ দল যখন এরকম কোনও সিদ্ধান্ত নেয় তখন আমাদের মনোভাব জানার চেষ্টাও করে না। যে মহিলারা আমাদের সমর্থন করেছিলেন তাঁরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। সবাই জানে যে কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়া বাবুশ মোনসেরাতে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত। তাঁর নামে চার্জশিটও জমা পড়েছে। এখন তাঁকে বিজেপিতে যোগদান করিয়ে মন্ত্রী পদ দেওয়া হচ্ছে।
এই ঘটনায় নিজের হতাশা চেপে রাখতে পারেননি গোয়ার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মনোহর পারিক্করের ছেলে উৎপলও। তিনি এদিন বলেন, “আমার বাবা যে রাস্তায় চলতেন এটা সম্পূর্ণ তার বিপরীত পথ। গত ৩০ বছর ধরে যে কর্মীরা দলের জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করছেন তাঁদের জন্য খারাপ লাগছে।”